সাহিত্যিক দীপু মাহমুদ আমাদের অহঙ্কার

সাহিত্যিক দীপু মাহমুদ আমাদের অহঙ্কার
মুহম্মদ রবীউল আলম: বিশিষ্ট লেখক ও অভিনেতা দীপু মাহমুদ চুয়াডাঙ্গার ছেলে। তার শৈশব ও বাল্যকাল কেটেছে মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে চুয়াডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়া গ্রামে। জন্ম ১৯৬৫ সালের ২৫ মে। তিনি সাহিত্যের সবধারায় লেখালেখি করছেন। তবে বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্যে তিনি বিশেষ নাম করে চুয়াডাঙ্গার মুখকে উজ্জ্বল করেছেন। আমরা তাকে নিয়ে অহঙ্কার করি, তাকে নিয়ে গর্ব করি। গত বইমেলায় তার ১১টি বই বেরিয়েছে। এ পর্যন্ত তার ৪০টি গ্রন্থ প্রকাশ পেয়েছে এবং প্রতিটি গ্রন্থ অত্যন্ত সুখপাঠ্য ও হৃদয়গ্রাহী। তিনি অত্যন্ত গুণী মানুষ। লেখাপড়ার উচ্চ শিখরে উঠে নিজেকে আলোকিত করতে সক্ষম হয়েছেন। লেখাপড়ার শেষ পর্যায়ে তিনি পিএইচডি করছেন যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিতে। পড়াশুনা করেছেন কুষ্টিয়া জিলা স্কুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও কোলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র ছিলেন এবং মতিহারের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তিনি বিশেষভাবে জড়িত ছিলেন। বিপুল ভোটে জয়লাভ করে রাকসু’র প্রমোদ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। নাটকের প্রতি তার বিশেষ আগ্রহ ছিলো। তাই তিনি কোলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক বিভাগে ভর্তি হন এবং উচ্চ ডিগ্রি লাভ করেন।
ফেইসবুকের মাধ্যমে এই গুণী মানুষের সাথে পরিচয় হয়। চুয়াডাঙ্গার ছেলে হওয়ার কারণে তার প্রতি আমার আগ্রহ হয়। চুয়াডাঙ্গার অধিকাংশ মানুষ এই গুণী ব্যক্তি সম্পর্কে কিছুই জানে না। অথচ তিনি আমাদের অঞ্চলকে কতো আলোকিত করে তুলেছেন। বর্তমানে তিনি একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় শিক্ষা বিভাগে কর্মরত রয়েছেন। চাকরি বলয়ে তিনি রেজা মাহমুদ আল হুদা। লেখালেখির জগতে লেখক দীপু মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘আমি সব বয়সের মানুষের জন্য লিখছি। আমার লেখা বেশকিছু বই আছে শিশুতোষ। আছে কিশোর গল্প ও উপন্যাস। বড়দের জন্য উপন্যাস লিখছি। আর কিছু শিক্ষামূলক বই। খুব ছোটবেলায় যারা আমার লেখা পড়বে, আমি জানি তারা কিশোর বয়সে এসে আমার লেখা খুঁজবে। আবার বড় হয়েও খুঁজবে। তাই সব বয়সের জন্য লেখা। চাকরির সুবাদে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে আমার বিভিন্ন বিষয়ে কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি সেগুলো লিখে যাচ্ছি বই আকারে যেন অভিজ্ঞতা বিনিময় সম্ভব হয়।’
শিশু সাহিত্য, উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ, সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তিনি সক্রিয়। প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে- শিশুসাহিত্য, নিতুর ডায়েরি ১৯৭১, বুসেফেলাস, এক যে ছিল ছোট পাখি, নয় পরি, বারো ভূত, বাঘের মন খারাপ, দুই জন্ম, মিরুর স্বপ্নখাতা, মাহিনের জুতো জামা, কিটি, রিকি, পুতলি ও ছেলেধরা, ছোটক, রায়া ও ছোটকু এবং আরও কিছু শিশুতোষ বই। উপন্যাস- তবু ভালোবেসো, ফিরে এসো কমেলা এবং ফেরা হয় না। ছোটগল্প সংকলন- উত্তরপুরুষ, মেঘ জড়ানো দিন ও তরব আলীর চাদর। লেখালেখির স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন সুনীতি অ্যাওয়ার্ড ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদফতরের বিশেষ সম্মাননা।
স্ত্রী রূপা, যমজ দু পুত্রসন্তান খালিদ ও গালিব। যাদের নিয়ে দীপু মাহমুদের লেখালেখির নিজস্ব ভুবন। তার বাবাও একজন গুণী মানুষ। তিনি একজন শিক্ষাবিদ ও লেখক। প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুল হুদা ছিলেন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান। মা মিসেস হামিদা বেগম। ৬ ভাই ১ বোনের মধ্যে আমি বাবা-মায়ের দ্বিতীয় সন্তান। বাবা ছিলেন বাংলার শিক্ষক। লেখালেখি করতেন। ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে বাবা চাকুরি জীবন শুরু করেন। আমরা সাহিত্যিক দীপু মাহমুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি। বাংলা সাহিত্যে তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা হোক এই প্রত্যাশা করি।