সর্ব রোগ থেকে আরোগ্য পাওয়ার গুজবে কান দিয়ে হুঁচুকে মাতা কি সত্যিই বাঙালির স্বভাবজাত? তা না হলে মাঝে মাঝেই মনগড়া গল্পে পাতা প্রতারণার দোকানে উপচেপড়া ভিড় জমে কেনো? হুঁচুকে মেতে ওঠাদের অবশ্য এক পর্যায়ে ঘোরকাটে। কখন? যখন সচেতন মহলসহ প্রশাসন স্বোচ্চার হয়, তখন। ততোদিনে প্রতারিতের সংখ্যা শুধু বেড়েই যায় না, তাদের অনেকের জীবনে নেমে আসে দুর্ভোগ। প্রথম দিকে সমাজের সচেতনমহল একটু স্বোচ্চার হলেই গুজবে কান দিয়ে হুঁচুকে মেতে ওঠার প্রবণতা দূর হতে বাধ্য। সর্বক্ষেত্রে তা হয় না মূলত কুসংস্কারাচ্ছন্নতার কারণে।
নদীর তীরে নদীর পানি থেকে অনেক দূরের পাড় বা স্থান থেকে পানি ওঠে। তাকে কি অলৌকিক কিছু বলা হয়? পাহাড়ের চূড়া বেয়েও কি পানি পড়ে না? ভূপরিম-লেরও বেশ কিছু স্তর রয়েছে। একস্থানের চাপের কারণে অন্য স্থান থেকে পানি অনারগল উদগীরণ যেমন অস্বাভাবিক নয়, তেমনই কোনস্থানে একটু ব্যতিক্রম কিছু ঘটলেই তা সর্বরোগ নিরাময়ের মহাওষুধ হয় না। বিষয়টি না বুঝে সমাজের সরল সোজা অনেকেই কারো কারো মনগড়া গল্পে কান দিয়ে মেতে ওঠেন। ভুল ভাঙানোর আগেই ছড়িয়ে পড়ে গুজব। হুঁচুকে মেতে ভিড় জমাতে থাকে সরল সোজা সাধারণ মানুষ। এরকমই চিত্র ফুটে উঠেছে মেহেরপুরের একটি গ্রামে। দৈনিক মাথাভাঙ্গা’র পাতায় উঠে এসেছে প্রতিবেদন। লালন ভক্ত বলে দাবি করে অলৌকিক কিছু বোঝানোর চেষ্টাও যে লালন সম্পর্কে অজ্ঞতারই বর্হিপ্রকাশ তা, লালন গবেষকেরাও নিশ্চয় অকোপটে স্বীকার করবেন।
এটাই প্রথম নয়, মাঝে মাঝেই সমাজে নানা ধরনের বিষয় নিয়ে হুঁচুকে মেতে ওঠার খবর পাওয়া যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সমাজের সচেতন যুবসমাজকেই সরল সোজা মানুষগুরোর ভুল ভাঙানোর মূল দায়িত্ব পালন করেন। মেহেরপুরের ভবানীপুরেও তেমনটিই ঘটবে। তার আগে ভিড় জমিয়ে বৈশি^ক মহামারী করোনায় কতোজন সংক্রমিত হয়ে, এবং ছড়িয়ে কতোজন কার সর্বনাশ করবেন তা কে জানে? শুধু সমাজের সচেতনমহলের ওপর ভরসা করলে চলবে না, প্রশাসনেরও আশু পদক্ষেপ নিতে হবে। দূর করতে হবে কুসংস্কারাচ্ছন্নতা। ছড়াতে হবে সচেতনতার আলো।