নতুন ভাইরাসে মৃত্যু : সতর্ক অবস্থানে যেতে হবে

হিউম্যান মেটানিউমোনিক ভাইরাস (এইচএমপিভি) বিদেশে প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর আমরা দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম। সবার মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছিলো এই ভাইরাস দেশে প্রবেশ করবে কিনা। তখন করোনাকালের স্মৃতি জেগে উঠেছিলো। কী দুঃসহ জীবনই না তখন কাটাতে হয়েছে আমাদের! আমাদের দুশ্চিন্তা ছিলো, এইচএমপিভি কি এদেশে প্রবেশ করে আবারও ঘটাতে চলছে অসংখ্য প্রাণহানি? অবশেষে আমরা দেখলাম, এ ভাইরাস দেশে প্রবেশ করেনি শুধু, প্রাণও কেড়ে নিয়েছে একজনের। তিনি ৩০ বছর বয়সি এক নারী, গত বুধবার রাজধানীর মহাখালী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি। এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হয়ে নারীর মৃত্যুর খবরে উদ্বেগ বেড়েছে বৈকি। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এ ভাইরাস করোনার মতো মরণঘাতী নয়, আর সচেতনতার মাধ্যমে এ ভাইরাস থেকে সুরক্ষা সম্ভব।
এটা ঠিক, বর্তমানে এইচএমপিভির চিকিৎসার জন্য কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টি-ভাইরাল থেরাপি নেই এবং এ ভাইরাস প্রতিরোধের কোনো ভ্যাকসিনও নেই। তবে করোনাকালে আমরা যেমনটা করেছিলাম, ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার করা, সমাবেশ এড়িয়ে চলা ইত্যাদির মাধ্যমে এ ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব। পাশাপাশি আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে চীন, জাপান, হংকং ও অন্যান্য দেশে রোগটি কী পরিমাণে ছড়াচ্ছে। এসব তথ্য সংগ্রহের পর আমাদের কাজের গতি নির্ধারণ করতে হবে। এই মুহূর্তে হাসপাতালগুলোয় অক্সিজেনের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা দরকার। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, এইচএমপিভির সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি থাকে শিশু ও প্রবীণদের ক্ষেত্রে; ২ বছর ও এর কম বয়সি শিশুদের প্রায় ৫০ ভাগকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। অন্যদিকে ৬৫ বছর বা এর বেশি বয়সের রোগীদের মধ্যে ২৫ শতাংশের বেশি এ রোগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এইচএমপিভি এখনো মহামারি আকারে দেখা দেয়নি।
কিন্তু যেহেতু ভাইরাসটি দেশে ঢুকে গেছে এবং একজন ভাইরাস আক্রান্ত মৃত্যুবরণ করেছেন, তাই এখন থেকেই আমাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ভাইরাসটি বাতাসে ছড়ায় এবং আক্রান্তের শরীরে ঠা-া-জ্বর বা ফ্লু দেখা দেয়। এমন উপসর্গের ক্ষেত্রে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট শিশু বা ব্যক্তিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে। দ্বিতীয়ত, করোনাকালে আমরা যেমন সবসময় সতর্ক অবস্থানে ছিলাম, তেমন সতর্কতা জারি রাখতে হবে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে।