চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় নবাগত পুলিশ সুপার
স্টাফ রিপোর্টার: পুলিশ এবং সাংবাদিক পরস্পরের বন্ধু হিসেবে সত্যের সন্ধানে কাজ করে। এ অভিমত ব্যক্ত করে চুয়াডাঙ্গার নবাগত পুলিশ সুপর আরএম ফয়জুর রহমান পিপিএম- সেবা বলেছেন, সমাজের আনাচে-কানাচে ঘটে যাওয়া অপরাধের সঠিক তথ্য দিয়ে সাংবাদিকবৃন্দ পুলিশকে সহযোগিতা করবেন এটাই আমার প্রত্যাশা।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইন্স ড্রিল শেডে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ আয়োজিত মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথি নবাগত পুলিশ সুপার উপরোক্ত আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, অসীম সহসিকতা, বীরত্ব, আত্মত্যাগের ইতিহতাসকে ধারণ করে সেবার সুমহান ব্রত নিয়েূ আমি এবং আমার টিম আপনাদের সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করন এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আমার চাকরির অভিজ্ঞতা, মেধা এবং প্রচেষ্টা সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে সচেষ্ট থাকবো। আপনাদের সহযোগিতায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং নির্বাচন আচরণ বিধিমালা মোতাবেক পুলশের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথযথ পালন করতে বদ্ধপরিকর। রাষ্ট্র, সংবিধান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে আমরা দেশপ্রেম, পেশাদায়িত্ব, সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনে অঙ্গিকারাবদ্ধ। আমাদের এই দীপ্ত পদের যাত্রায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।
মতবিনিময় সভা সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিছুজ্জামান লালন। উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন ) পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত রিয়াজুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা, ডিআই-১ জিহাদ ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাব্বুর রহমান কাজল। সভায় বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন, সিনিয়র সাংবাদিক অ্যাড. মানিক আকবর, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচি, সাবেক সভাপতি আজাদ মালিতা, এনটিভি প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক শাহ আলম সনি প্রমুখ। এছাড়াও মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সহ সাধারণ সম্পাদক ইসলাম রাকিব, দফতর সম্পাদক আবুল হাসেম, সদস্য কাউন্সিলর কামরুজ্জামান চাঁদ, সদস্য হুছাইন মালিক, সাংবাদিক জিসানসহ অনেকে।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশে ২৮তম পুলিশ সুপার হিসেবে আমি গত ১৭ নভেম্বর দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি। পুলিশ সুপার পদটি আমি জেলা পুলিশের প্রধান হিসেবে নয়, বরং আমি গ্রহণ করেছি রাষ্ট্রকর্তৃক প্রদত্ত সুমান দায়িত্ব হিসেবে। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতের সতেজ বৃক্ষের কৃতিত্ব লুকিয়ে আছে অতীতের প্রাণ সঞ্চালনকারী বীজের মধ্যে’ এই উক্তি আমি বিশ্বাস করি। আর তাইতো সাফল্যের পথে এগিয়ে চলা দৃপ্ত বাংরাদেশের সঞ্জীবনী সুধার কৃতিত্ব আমি দিতে চাই ‘স্বাধীনতা’ নামক শব্দটির। এ শব্দ যার কারণে আমাদের হলো সেই বাংলাদেশের প্রাণপুরুষ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও জাতির পিতার পরিবারের অন্যান্য সদতস্যসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের নৃশংস হত্যাকা-ের শিকার সকলকে। আমি আমার চার জাতীয় নেতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
নবাগত পুলিশ সুপার মতবিনময় সভায় পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান পিপিএম সেবা মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, স্মরণ করছি আমাদের মা বোনদের যারা মুক্তিযুদ্ধে তাদের সর্বস্ব হারিয়েছেন। একই সাথে পকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ করা বাংলাদেশ পুলশ সদস্যদের প্রতিও সম্মান জানাতে চাই। যারা যুদ্ধের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে থ্রিনটথ্রি রাইফেল দিয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়েছিলেন তাদের প্রতি বিনম্রশ্রদ্ধা। সশ্রদ্ধচিত্তে অভিবাদন জানাতে চাই সেই সকল পুলিশ সদস্যদের যারা জনগণের নিরাপত্তা ও আইনের শাসমন এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার হিসেবে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব মেধা মনন সততা এবং নিষ্ঠার সাথে পালনের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, কুইক রেসপন্স এবং সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গার ৫টি পুলিশ স্টেশন হবে আইনী সেবা প্রত্যাশীদের নির্ভরশীল কেন্দ্রবিন্দু। পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বপালনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।