স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চৌগাছা গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়েছিলেন জমির খাজনা পরিশোধ করতে। কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও তার জমির খাজনা নেননি স্থানীয় তহশিলদার। কাজ ফেলে তিন দিন তাকে যেতে হয়েছিলো তহশিল অফিসে। অবশেষে ভুক্তভোগী কৃষক তিন দিনের পারিশ্রমিক চেয়ে এবং জমির খাজনা মওকুফের দাবিতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর আবেদন করেছেন। সরকারি অফিস থেকে সেবা না পেয়ে পারিশ্রমিক চেয়ে আবেদনকে একটি নতুনত্ব বলে মনে করছেন জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান।
জানা গেছে, চৌগাছা গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম তার মেয়ে খাদিজা খাতুনের জমির খাজনা পরিশোধ করতে সাহারবাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান। প্রথম দিন তাজুল ইসলামের সঙ্গে কোনো কথাই বলতে চাননি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) নুরুল হুদা। দ্বিতীয় দিনেও খাজনা নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সেদিনও তাকে ফেরত আসতে হয়। তৃতীয় বার বুধবার সকালে তাজুল ইসলাম কাজফেলে আবারও যান ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। তহশিলদার নুরুল হুদার হাত ব্যথার কারণে এবারও তাকে ফেরত আসতে হয়। অবশেষে দুপুরে তাজুল ইসলাম তিন দিনের হয়রানির মূল্য ও পারিশ্রমিক চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন।
ভুক্তভোগী তাজুল ইসলাম বলেন, আমি একজন দিনমজুর কৃষক। আমি তিনদিন ভূমি অফিসে গিয়েছি। আমার সঙ্গে তহশিলদার কথা বলেননি। আজ সকালে গিয়েছিলাম তিনি বলেছেন আমার হাত ব্যথা লিখতে পারব না, অন্য একদিন আসেন। আমি গরিব মানুষ। আমাকে কাজ করে সংসার চালাতে হয়। মেয়ের জমির খাজনা দিতে গিয়েছিলাম, কিন্তু জমির সমস্ত কাগজপত্র সঠিক থাকা সত্ত্বেও খাজনা নেয়নি। এছাড়াও তহশিলদার আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। পরে আমি গাংনী উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়েছিলাম। সেখানে সমাধান না পেয়ে অবশেষে জেলা প্রশাসক বরাবর তিন দিনের পারিশ্রমিক চেয়ে আবেদন করেছি। বিনা কারণে সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা সেবা গ্রহীতাদের অবহেলা করলে পারিশ্রমিক দাবি করতেই পারি। এটা আমার অধিকার।
গাংনী উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা নাজমুল আলম বলেন, আমার কাছে একজন এসেছিলেন। আমি তার দরখাস্তে খাজনা নেয়ার জন্য সুপারিশ করেছি। খাজনা পরিশোধ করতে আসা বা সরকারি অফিসে সেবা গ্রহীতারা হয়রানি হলে রাজস্ব আদায় বিঘিœত হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান বলেন, সরকারি আফিসে গিয়ে সেবা না পেয়ে ভুক্তভোগী পারিশ্রমিক চেয়ে আবেদন করেছেন। এমন আবেদন নতুন। তার দাবির যৌক্তিকতা রয়েছে। তিনি পরপর তিন দিন ঘুরেছেন, তিনি তার মজুরি বা পারিশ্রমিক দাবি করতেই পারেন। তবে কী কারণে খাজনা দিতে গিয়ে তিন দিন ঘুরতে হয়েছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।