স্টাফ রিপোর্টার: অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে হঠাৎ করে শতাধিক পণ্য ও সেবায় মূল্য সংযোজন কর বা (ভ্যাট) ও শুল্ক কর বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পাশাপাশি হঠাৎ করে গ্যাসের দাম প্রায় ১৫০ শতাংশ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে পণ্য ও সেবার খরচ যেমন বাড়বে তেমনি উৎপাদন ব্যয়ও বাড়বে। সরকারের এসব পদক্ষেপে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক দল ও অর্থনীতিবিদরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে সরকার শুল্ককর বাড়ানোর সহজ পথ বেছে নিয়েছে। এতে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে নিম্ন আয় ও প্রান্তিক আয়ের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ আরও বেড়ে যাবে। সাধারণ মানুষ চাপের মধ্যে আছে। কর বৃদ্ধির ফলে পরিস্থিতি আরও তীব্র হবে। বাজারে পণ্যের মূল্য বাড়বে এবং গরিব ও মধ্যবিত্তদের জন্য জীবনযাপন অতি কঠিন হয়ে উঠবে। অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজস্ব আদায়ে ধস নামার প্রভাব ঠেকাতে এবং আইএমএফ’র কাছ থেকে অতিরিক্ত এক বিলিয়ন ডলার পাওয়ার জন্যই সরকার কর আদায়ের এ সহজ পথ বেছে নিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, সরকার কর-জিডিপি’র অনুপাত বাড়ানোর কঠিন পথে না গিয়ে সহজ পথে হাঁটলো। পরোক্ষ কর ধনী-গরিব সবার জন্যই সমান। পরোক্ষ কর বাড়লে ধনীদের সমস্যা হয় না, সমস্যা হয় গরিবের। এতে অসমতা আরও বাড়বে। সিপিডি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস হচ্ছে। যারা মধ্যবিত্ত ও সীমিত আয়ের মানুষ তাদের জন্যও এটা খুবই চাপের হয়ে গেছে। এটা সম্পূর্ণভাবেই আইএমএফ’র যে শর্ত আছে, সেই শর্তের চাপের কাছে নতি স্বীকার করা হলো। ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান আব্দুল মুক্তাদির বলেন, বর্তমানে আমরা উৎপাদন থেকে পাইকারি পর্যায়ে যখন সরবরাহ করছি তখন ১৫ শতাংশ অলরেডি ভ্যাট দিচ্ছি। এরপর তারা যখন খুচরায় বিক্রি করে তার জন্য তাদের প্রফিট মার্জিন দিতে হয় ১৬ শতাংশ। ভ্যাট নিলে তাদের থেকে ১৫ শতাংশ নেয়ার কথা ছিল। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, সরকার বলছে এর মাধ্যমে সরকারের আয় বাড়াচ্ছে। তারা আয় বাড়াচ্ছে না; আমার খরচ বাড়াচ্ছে। ভ্যাট না বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়াতে ব্যবসার পরিবেশ নিশ্চিত ও সরকারের উন্নয়ন কমানোর পক্ষে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আপনি বিদ্যুৎ দেন, গ্যাস দেন, আমরা দরকারে ফেরি করে আমাদের পণ্য সরবরাহ করবো। এডিপিতে খরচ কমিয়ে এটি দুই লাখ কোটি টাকায় নামিয়ে ফেলেন। এই মুহূর্তে সরকারের ৩০ শতাংশ ব্যয় কমানো সম্ভব। বাংলাদেশ রেস্তরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন বলেন, জনগণের সরকার ক্ষমতায়; কিন্তু এমন একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা নেই। আইএমএফ’র কথা বলে বাজেটের মাঝপথে এভাবে জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেয়ার কোনো যুক্তি নেই। বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন-আইএসপিএবি’র সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, এমনিতে বাংলাদেশে ব্রডব্যান্ডের পেনিট্রেশন অনেক কম। আপনি গ্রাহকদের সুবিধা না দিতে পারলে তা আর বাড়বে না। এখন এই সম্পূরক শুল্ক আরোপের ফলে যে বাড়তি টাকাটা দিতে হবে এটা কিন্তু সরাসরি গ্রাহকের পকেট থেকে যাবে। রাজধানীর তেজতুরী বাজারের বাসিন্দা খাইরুল বলেন, সরকার কর বাড়িয়ে রাজস্ব আয় বাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু ভোক্তার আয় বাড়লো কিনা তা নিয়ে আলাপ নাই। মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের উপরে থাকতেই ভ্যাট বাড়িয়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো হচ্ছে। আমরা যাবো কই? আমাদের চাপ তো আরও বাড়লো। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সাব্বির সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারী’ উল্লেখ করেছেন। তার ভাষায় অভ্যুত্থানের ফসল হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণকারী এ সরকার গণমানুষের আকাক্সক্ষা পূরণ করবে বলে প্রত্যাশা ছিলো সবার। তবে সেই প্রত্যাশায় ছেদ ঘটেছে। তিনি বলেন, বাজারে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। ওষুধের দাম গত তিন বছর ধরে বেড়েই চলেছে। আর কত বাড়াবে এর দাম। বেসরকারি একটি কারখানায় চাকরি করেন মাজেদুর। তিনি বলেন, গত জানুয়ারিতে একটি রেস্টুরেন্টে এক বাটি হালিম খেয়েছিলাম ৮০ টাকা। এই শুক্রবার ওই একই রেস্টুরেন্টে এক বাটি হালিমের দাম রেখেছে ১৩০ টাকা। ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী: ঢাকা চেম্বার অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা না করে ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলে মনে করছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে সমসাময়িক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ। এ সময় ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরীসহ সংগঠনটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ জানান, বর্তমানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে, ডলারের দাম বেশি। গণ-অভ্যুত্থানের পর বিনিয়োগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ঋণের সুদহারও অনেক বেশি। এমন পরিস্থিতিতে ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অর্থনীতির গতি কমিয়ে দেবে। চাপে পড়বে জনগণ। তাসকীন আহমেদ বলেন, সরকারের এমন পদক্ষেপের সঙ্গে আমরা একমত নই। বেসরকারি খাতে একসঙ্গে এতগুলো জায়গায় ভ্যাট বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতীমূলক। এ বিষয়ে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, নীতির ধারাবাহিকতা ঠিক না রাখার সর্বশেষ উদাহরণ হলো গত সপ্তাহের এই ভ্যাট বৃদ্ধির ঘটনা। মোটরসাইকেল ও ইলেকট্রনিকস খাতের কিছু পণ্যে আয়কর ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। এটি ব্যবসায়ীদের শুধু বিপদে ফেলবে না, একইসঙ্গে দেশের ভাবমূর্তিকেও খারাপ করছে। আয়কর বাড়ানোয় আগামী তিন মাসের মধ্যে মোটরসাইকেলের দাম ১০-১৫ শতাংশ বাড়তে পারে। মানুষকে কষ্ট দিয়ে এভাবে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত না নিয়ে সরকারকে অন্য উপায় খোঁজার পরামর্শ দেন তাসকীন আহমেদ। বলেন, সরকারি ব্যয় ২০ শতাংশ কমানো গেলে সেখান থেকে এক বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো সাশ্রয় করা সম্ভব। সুতরাং সরকারি ব্যয় কমান। তিনি বলেন, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যবসায়ের পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে। বর্তমানে অনেক সংস্কারের কথা শুনছি, সামনে নির্বাচনের আলোচনাও রয়েছে। তবে আমরা মনে করি, অর্থনীতি ও রাজনীতি একই পথে যেন না চলে। রাজনীতি রাজনীতির মতো করে চলুক, সেটি যেন অর্থনৈতিক কর্মকা-কে প্রভাবিত না করে। এ সময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন ব্যবসায়ীরা তো সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন, নির্বাচন করছেন। এর জবাবে তাসকীন আহমেদ বলেন, গুটিকয়েক ব্যবসায়ীকে দিয়ে সবাইকে বিচার করা ঠিক হবে না। আমরা মনে করি, ব্যবসায়ীদের শুধু ব্যবসায়িক কর্মকা-েই মনোনিবেশ করা উচিত। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য-সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তাসকীন আহমেদ বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে অস্থিরতা চলছে, সেটিকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিষয় বলে মনে করছি। এ কারণে দুই দেশের ব্যবসাতেই কিছু প্রভাব পড়েছে। ফলে ভিসা জটিলতাসহ ব্যবসায়ের অন্য সমস্যাগুলো যত দ্রুত সমাধান হবে, তত দ্রুত দুই দেশের জন্য ভালো হবে। ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার চায় নাগরিক কমিটি বিভিন্ন পণ্য ও সেবায় ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর নেয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চেয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সংগঠনটি মনে করে, সরকার রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে শতাধিক পণ্য ও সেবার উপর ভ্যাট ও ট্যাক্স বাড়ানোর জন্য দুটো অধ্যাদেশ জারি করার ফলে মূল্যস্ফীতি ও ব্যবসার খরচ বাড়বে। যা সাধারণ মানুষের জীবনমানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। গতকাল রাজধানীর বাংলামোটরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। ছাত্রআন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা সংগঠনটি অবিলম্বে অধ্যাদেশ দু’টি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, সরকার তার রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য করের আওতা বাড়াবে-এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু কর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান যাতে নেমে না যায় ও তাদের ভোগান্তি যাতে না বাড়ে সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালে এই মধ্যবিত্ত, এই গার্মেন্টস শ্রমিক, এই সাধারণ মানুষ অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছিল। তাদের প্রত্যাশা ছিল ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের পতনের পর ন্যূনতম জীবনযাপনের উপকরণগুলো তাদের জন্য সহজলভ্য হবে, ভেঙে যাবে লুটেরাদের সিন্ডিকেট, বৃদ্ধি পাবে তাদের ক্রয়ক্ষমতা, ফিরে পাবে তাদের আত্মমর্যাদা।
আখতার হোসেন বলেন, বিগত অবৈধ সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও বিদেশে অর্থ পাচারের কারণে দেশের অর্থনীতির অবস্থা খুবই ভঙ্গুর ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। এ অবস্থায় বিগত অবৈধ সরকার আইএমএফের কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আপনারা জানেন যেকোনো দেশের জন্য আইএমএফের ঋণ হলো ঋণপ্রাপ্তির সর্বশেষ আশ্রয়। এই কঠিন ঋণের শর্ত হিসেবে রাজস্ব বাড়ানোর সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমপ্রতি এ অধ্যাদেশগুলো জারি করেছে। নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন- বর্তমান সরকার ঋণের এই শর্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আইএমএফকে আহ্বান জানিয়েছে কী? তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকার একটি অবৈধ সরকারের চুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জনদুর্ভোগ বাড়াতে পারে না।
তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান টিসিবি (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) গরিব জনগণ যাতে স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারে তার জন্য ট্রাকে করে তেল, ডাল ও চাল বিক্রি করে। এটি একটি অবমাননাকর প্রক্রিয়া। আমরা দেখেছি, এই দেশের নাগরিক কীভাবে ট্রাকের পেছনে ৫ টাকা, ১০ টাকা কমে চাল, ডাল ও তেল কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। এই ধরনের প্রান্তিক মানুষকে রাষ্ট্রের কাছ থেকে ন্যূনতম যে অধিকার তাও ট্রাক সেল বন্ধ ঘোষণার মাধ্যমে কেড়ে নেয়া হয়েছে। আমরা কল্পনা করতে পারি না জনগণের প্রতি কতোটা দায়হীন অনুভব করলে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে! এ সময় সরকারের কাছে অবিলম্বে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি সংক্রান্ত অধ্যাদেশসমূহ প্রত্যাহার করতে হবে ও টিসিবি’র ট্রাক সেল এই মুহূর্তে চালুর দাবি করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বিকল্প হিসেবে কয়েকটি প্রস্তাবনা দেয়া হয়। সেগুলো হলো-প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়াতে হবে ও কর জাল সমপ্রসারণ করতে হবে, যা সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনমানের ক্ষতি করবে না। আমরা জানি প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জিং কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকারকে অবশ্যই সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে; বিদ্যমান কর কাঠামোয় যে সীমাহীন দুর্নীতি হয় তা বন্ধ করার উদ্যোগ নিলে রাজস্ব আয় বাড়বে; বিগত সরকার ১৫ বছরে বিদেশে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করেছে বলে শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সেগুলো দেশে ফেরত আনার জন্য সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; গত ১৫ বছরে দেশের ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করে ৯২ হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে ও খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা। এগুলো আদায়ের উদ্যোগ নিতে হবে; দেশে বিদ্যমান অর্থঋণ আদালত (২০০৩) সরকারকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল করার যাবতীয় আইনি সুযোগ দিয়েছে। সরকার এ সুযোগ ব্যবহার করে দ্রুত একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে খেলাপি অর্থ আদায় ও অনাদায়ে তাদের সম্পত্তি ক্রোক করতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, সহ মুখপাত্র মুশফিক-উস সালেহীন প্রমুখ।