লিবিয়ায় জিম্মিদশা থেকে বাড়ি ফিরে জিম্মি মাফিয়াকে ধরতে গিয়ে মারধরের শিকার আলমডাঙ্গার খায়রুল

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: লিবিয়ায় আট মাসের করুণ জিম্মিদশা থেকে বাড়ি ফিরে জিম্মি মাফিয়ার গডফাদার আলামিনকে ধরতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন আলমডাঙ্গার খায়রুল ইসলাম। তিনি দুজনকে সাথে নিয়ে ১২ লাখ টাকা ফিরে পেতে লিবিয়ার জিম্মি মাফিয়া আলামিনকে ধরতে যান কুষ্টিয়ার ইবি থানার নলখোলা গ্রামে। সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির এক পর্যায়ে খায়রুল আলামিনকে মাইক্রোবাসে তুলে আলমডাঙ্গার কালিদাসপুরে নিয়ে আসেন। অন্যদিকে, খায়রুলের সাথে যাওয়া তার বিয়াই সালামকে আলামিনের লোকজন বন্দী করে রাখে। পরবর্তীতে দু’পক্ষের আলোচনায় বন্দী বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে মাফিয়া আলামিন ও সালাম মুক্ত হন। মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়া ইবি থানার নলখোলা ও আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে। দুজনের বন্দী হওয়া ও মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
জানা গেছে, গত বছর আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম নবার ছেলে খায়রুল ইসলামকে ইতালি যাওয়ার প্রলোভন দেখান একই গ্রামের হাসেম আলীর ছেলে মিলন ড্রাইভার। খায়রুল ইসলাম দালাল মিলনকে বারো লাখ টাকা দেন ইতালি যাওয়ার জন্য। এরপর এক সময়কার লিবিয়া প্রবাসী কুষ্টিয়ার পাটিকাবাড়ি নলখোলার রবিজুল ইসলাম খায়রুলকে লিবিয়ায় পাঠিয়ে দেন। খায়রুল লিবিয়ায় গিয়ে জিম্মি মাফিয়া গডফাদার আলামিনের কাছে গিয়ে পড়েন। সেখানে দীর্ঘ আট মাস অবর্ণনীয় মারধরের শিকার হন খায়রুল। বাড়ির লোকজনকে ভিডিও কলে রেখে খায়রুলকে মারধর করে মুক্তিপণ দাবি করা হত। খায়রুল বাড়ির লোকজন জমিজমা বিক্রি করে আলামিনকে ৪৭ লাখ টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হন। এই টাকা দেশের বিভিন্ন জেলাতে তার লোকজনের কাছে দিয়ে আসতে হত।
অবশেষে গত মাসে নির্ঘাত মৃত্যুর দোয়ার থেকে টাকা বিনিময়ে ছাড়া পেয়ে খায়রুল বাড়িতে ফিরে আসেন। খায়রুল মঙ্গলবার খবর পান জিম্মি মাফিয়া আলামিন দেশের বাড়িতে এসেছে। এ খবর পেয়ে খায়রুল তার দুই সহযোগিকে সাথে নিয়ে কুষ্টিয়ার নলখোলায় আলামিনের কাছে যান। তাদের মধ্যে দেখাও হয়। প্রথমে কথা কাটাকাটি পরে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়ে যায়। মারামারির মধ্যে খায়রুল ধাক্কা দিয়ে আলামিনকে মাইক্রোতে তুলে আলমডাঙ্গার কালিদাসপুরে নিয়ে আসেন। ওদিকে আলামিনের লোকজন খায়রুলের সহযোগী সালামকে আটকে রাখে। দু’দিকে দু’জনই মারধরের শিকার হন। এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ঈদের পরে আলোচনা হবে এমন শর্তে দু’পক্ষের লোকজন আলোচনা শেষে দু’দিকে বন্দী থাকা দুজন মুক্ত হন।