মেহেরপুরে বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক শামসুজ্জামান মিঠুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

মাদকের কারণে ঋণগ্রস্থ : পারিবারিক অশান্তি আত্মহত্যার নেপথ্যে

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক (ডেপুটি ম্যানেজার) শামসুজ্জামান মিঠু আত্মহত্যা করেছেন। মেহেরপুর সদর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গতকাল রোববার সকাল ৮টার দিকে বিসিক শিল্প নগরীর অদূরে একটি আমগাছের ডাল থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। মেহেরপুর বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক শামসুজ্জামান ঝিনাইদহ জেলা শহরের বাসিন্দা। তিনি ঝিনাইদহ স্টেডিয়ামপাড়ার সওগাতুল ইসলামের ছেলে। গত ১১ জুলাই তিনি তার চাকরিতে পদোন্নতি লাভ করে দ্বিতীয় মেয়াদে মেহেরপুরে যোগদান করেন। শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার ভোরের মধ্যে কোনো এক সময় তিনি গলাই দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।

স্থানীয় ও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, এক সময়কার তুখোড় ফুটবল খেলোয়াড় শামসুজ্জামান বিসিকে চাকরি জীবন শুরু করেন। চাকরি করাকালে তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। এর আগে মেহেরপুর জেলায় দীর্ঘদিন চাকরি করার সুবাদে স্থানীয় মাদকসেবীদের সাথে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। পরে মেহেরপুর থেকে থেকে বদলি হয়ে যাওয়ার পর আবারো মেহেরপুর আসার জন্য তিনি বিভিন্নভাবে তদবির শুরু করেনে। পরে চাকরিতে পদোন্নতি লাভ করে তিনি আবারো মেহেরপুর চলে আসেন।

উপ-ব্যবস্থাপক শামসুজ্জামান মেহেরপুরে চাকরি করুক এটি তার পরিবারের সদস্যরা চাইতেন না। এ নিয়ে পরিবারের সঙ্গে তার মতানৈক্য চলছিল বলে একটি সূত্র জানিয়েছেন। পরিবারের সাথে এই দূরত্বের কারণেই তিনি আত্মহত্যা পথ বেছে নেন বলে অনেকে মনে করছেন।

বিসিক শিল্পনগরীর উত্তরে আধা কিলোমিটার দূরে শহরের দীঘিরপাড়ার বিশিষ্ট তেল ব্যবসায়ী আঙ্গুর হোসেনের পুকুরের উত্তর পাড়ের একটি আম গাছে মরদেহ ঝুলতে দেখে সকালে স্থানীয় কৃষকরা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে ময়না তদন্তের জন্য পুলিশ তার লাশ মেহেরপুর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

উপ-ব্যবস্থাপক শামসুজ্জামানের বাড়ি ঝিনাইদহ হলেও তার পরিবার চুয়াডাঙ্গাতে বসবাস করতেন। শামসুজ্জামান মেহেরপুরে দ্বিতীয়বারের মতো যোগদান করার পর চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা যাওয়া করতেন। মাঝে মধ্যে তিনি অফিসের একটি কক্ষে রাত্রি যাপন করতেন। গত শনিবার বিকেলের দিকে মোটরসাইকেলযোগে তাকে বিসিক শিল্প নগরীর এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন অনেকেই। শামসুজ্জামান পিতা-মাতার ৬ ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে চতুর্থ সন্তান ছিলেন। তিনি স্ত্রী ও দুটি সন্তান রেখে গেছেন।

মেহেরপুরের সহকারী পুলিশ সুপার শামীম জানান, মেহেরপুর বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক (ডেপুটি ম্যানেজার) শামসুজ্জামান মিঠু আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন এবং সম্প্রতি তিনি নানা কারণে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে হত্যা না আত্মহত্যা তা সঠিকভাবে জানা যাবে।

Comments (0)
Add Comment