বিএনপি-জামায়াতের ২১ নেতাকর্মী গ্রেফতার : ৭টি বোমা উদ্ধার

চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ঝটিকা অভিযান : নাশকতার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জামায়াত-বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ২১ নেতাকর্মী গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে ও গতকাল বুধবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে থাকা ৭টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে উদ্ধারকৃত বোমাসহ তাদেরকে আদালতে মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বিএনপির মহা-সমাবেশকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ দলটির নেতাকর্মীদের। তবে পুলিশ বলছে, তারা নাশকতামূলক কার্যকলাপ সংঘটিত করা সহ সরকারি স্থাপনা ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে অবৈধ অস্ত্র গুলি, বোমাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক করছিলো। সংবাদ পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১১জন, সদরে দুজন, দামুড়হুদায় দুজন ও দর্শনা থানায় ৮জন রয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের অভিযানে পৌর এলাকার কেদারগঞ্জপাড়ার মুসা আলীর ছেলে সাঈদ সিদ্দীকি সোহেল (২৮) ও সদর উপজেলার কুকিয়াচাঁদপুর গ্রামের মৃত কিয়ামউদ্দীনের ছেলে মনির হোসেন (৬৫)। সদর থানা পুলিশ মঙ্গলবার রাতে নাশকতা মামলায় তাদের গ্রেফতার করে।

আলমডাঙ্গা থানায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আসাদুজ্জামান বকুল (৫৩), সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন (৪০), ভাংবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি আতাউল হুদা (৪৫), সদস্য বাদশা আলম (৬০), বাড়াদী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ওবাইদুল ইসলাম ঝন্টু (৪৩), লুৎফর রহমান টিটু (৫০), ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ও চিকিৎসক একেএম নাজমুস সালেহীন লিপন (৪১), জেহালা ইউনিয়ন বিএনপি সদস্য সমসের আলী ছমে (৪৭), জামজামি ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মজিবর রহমান (৫৫), খাসকররা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ফতে আলী (৬০), আলমডাঙ্গা পৌর ছাত্রদলের সদস্য জনি (২৮)।

আলমডাঙ্গা থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ জানান, নাশকতা পরিকল্পনার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এনায়েতপুর স্কুল মাঠ থেকে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বুধবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

দর্শনা থানায় গ্রেফতাররা হলেন দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণচাঁদপুর গ্রামের দামুড়হুদা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আমজাদ হোসেন, জামায়াত নেতা তানজিল হোসেন, তিতুদহ গ্রামের নাজমুল হক ও হাফিজুল ইসলাম, নেহালপুর গ্রামের লোকমান হোসেন ও আরাফাত রহমান এবং বেগমপুর ইউনিয়ন জামায়াতের নেতা মোশারফ হোসেন।

দর্শনা থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, গ্রেফতারদের কাছ থেকে ৭টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে, যা নাশকতার কাজে লাগানো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া দামুড়হুদা থানায় আব্দুল গফুর (৪৯) নামে আরও এক জামায়াত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটককৃতেদর বুধবার বিকেলে নাশকতা মামলায় চুয়াডাঙ্গা আদালতে পাঠানো হয়েছে। দামুড়হুদা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, অভিযান চালিয়ে জামায়াত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফ অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে। জেলা থেকে নেতাকর্মীরা যাতে সমাবেশস্থলে যেতে না পারেন, সেজন্য মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত মোট ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের নামে কোনো মামলা নেই। তিনি আরও বলেন, ঢাকায় সমাবেশে যাওয়ার পথে পুলিশ চুয়াডাঙ্গার পাঁচ নেতাকর্মীকেও আটক করেছে বলে জেনেছি।

Comments (0)
Add Comment