ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডতে ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মোশারফ হোসেন (৪২) নামে একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে হরিণাকুন্ড উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মোশারফ হোসেন ওই এলাকার খবির মন্ডলের ছেলে। তিনি পেশায় একজন মুহুরি ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার রাতে ওয়াজ মাহফিলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু-গ্রুপের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মোশাররফ নিজ বাগানে কলা কাটতে যান। সে সময় সাইদ হোসেন গ্রুপের সমর্থক সাইদ, মোস্তাক, অন্তরসহ ১০-১২ জন হানেফ মন্ডলের সমর্থক মোশারফের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন। সেখানে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে মোশাররফ মারা যান। এর আগে মোশাররফের ডাক-চিৎকারে হানেফ, নাছির, রবিন, খালেকসহ অন্যান্যরা ছুটে এলে তারাসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন।
চাঁদপুর ইউনিয়নের মেম্বার আশরাফ উদ্দীন স্বপন জানান, দীর্ঘদিন ধরে হাকিমপুর গ্রামের দবির উদ্দিন মন্ডল ও তার ভাই মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে একই গ্রামের মহিন, বকুল ও সাঈদের সমর্থকদের আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলছিলো। সোমবার সন্ধ্যায় ধর্মসভা আয়োজন নিয়ে মিটিং চলাকালে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর জের ধরে মঙ্গলবার সকালে দবির ও মোশাররফ হোসেন মাঠে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
দবির উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার সকালে তার ভাই মাঠে কাজ করছিলেন। তখন মহিউদ্দিনের লোকজন অতর্কিত ভাইয়ের ওপর হামলা করেন। সে সময় ভাই বাঁচতে দৌড়ে বাড়ির দিকে চলে এলে সন্ত্রাসীরা বাড়ির সামনেই তাকে এলোপাতাড়ি কোপান। ঘটনার সময় তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আরও ৭ থেকে ৮ জন আহত হন। তারা মোশাররফ হোসেনকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘সকালে হরিণাকু-ু থেকে কয়েকজন রোগী এসেছিলো। তাদের মধ্যে মোশাররফকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
হরিণাকু-ু থানার ওসি এম এ রউফ খান বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে একই পরিবারের মধ্যে বিরোধ ছিলো। এ ঘটনায় মোশাররফ হোসেনকে কুপিয়ে আহত করা হলে তিনি হাসপাতালে মারা যান। ঘটনায় মহিন নামের একজনকে আটক করে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’