শৈলকুপায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ২৩ দিনে এক ইউনিয়নে ৫জনকে হত্যা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের শৈলকুপার সারুটিয়া ইউনিয়নে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আরেকজন নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে ডেকে মেহেদী হাসান (২৫) নামের এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে শনিবার ভোরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিহত মেহেদী সারুটিয়া গ্রামের দবির উদ্দিন শেখের ছেলে। তিনি স্যানিটারি ও ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করতেন। এ নিয়ে ৫ জানুয়ারির ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় গত ২৩ দিনে সারুটিয়া ইউনিয়নে ৫ জন খুন হলেন।
স্থানীয় লোকজন বলেন, সারুটিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের মাহমুদুল হাসান ও পরাজিত একই দলের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী জুলফিকার কায়সারের মধ্যে বিরোধ আছে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার ফোনে কল দিয়ে পার্শ্ববর্তী বাজারে ডাকা হয়। ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাজারের কাছে তালতলা ব্রিজের ওপর গেলে কয়েকজন লোক তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। এরপর তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত মেহেদীর মা ইয়াসমিন বেগম বলেন, তার ছেলে একজনের হয়ে ভোট করেছে, এটাই তার অপরাধ। বর্তমান চেয়ারম্যানের লোকজন তাকে হত্যা করেছেন। তিনি এই হত্যার বিচার চান।
বর্তমান চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, নিহত মেহেদী আগে যে দলই করুন না কেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে তার সমাজের লোকজনের সঙ্গে মিশে ছিলেন। যারাই হত্যাকা- ঘটিয়েছেন, তাদের উপযুক্ত বিচার হোক; সেই দাবি করেন তিনি। অপরাধীদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলার সারুটিয়া গ্রামের মেহেদী নামের একজনকে কুপিয়ে আহত করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। নির্বাচনী সহিংসতায় এই হত্যাকা- বলে তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আটকের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
এ নিয়ে পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতায় পাঁচজন মারা গেলেন। গত ৩১ ডিসেম্বর নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলায় অখিল সরকার, হারান আলী ও আবদুর রহিম এবং ১ জানুয়ারি ছুরিকাঘাতে জসিম উদ্দিন প্রাণ হারান। এছাড়া ৮ জানুয়ারি উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের হামলায় কল্লোল হোসেন নামের একজন মারা যান।