দ্বায় নিতে চান না কোনো কর্তৃপক্ষ : ভোগান্তিতে রোগী সাধারণ
মিরাজুল ইসলাম মিরাজ: দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের ৫/৬টি টিউবওয়েল স্থাপন করা থাকলেও সবগুলো পড়ে আছে অকেজো। রোগী সাধারণের পানি খাওয়ার জন্য নেই কোনো পানি সরবরাহের ব্যবস্থা। প্রতিনিয়তই ভোগান্তি পোয়াতে হচ্ছে রোগীসহ সর্বসাধারণের। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যেন কোনো মাথা ব্যথায় নেই। এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর পৃথক পৃথক মন্তব্যে কেউ কোনো দ্বায় নিতে চান নি।
জানা যায়, গত কয়েক মাস যাবৎ দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাঙ্গণে বিভিন্ন স্থানে স্থাপনকৃত ৬টি টিউবওয়েল অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরাসহ স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি সমাধানের কথা বললেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এই হাসপাতালে ভর্তি রোগীর স্বজনেরা তাদের খাবার পানি বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয় বলে জানায়। আর যারা ইতঃপূর্বে এই হাসপাতালে এসেছেন তারা এখন বাড়ি থেকে পানি বোতলজাত করে নিয়ে আসেন। দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চত্বরে ৬টি টিউবওয়েল স্থাপন করা থাকলেও একটিও স্বচল না থাকায় ভুক্তভোগী এক রোগীর স্বামী জাদুশিল্পী মোহাম্মদ আলী দুর্ভোগের বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। মুহূর্তের মধ্যেই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। সেই ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো। এই হাসপাতালের চিকিৎসার মান যায় হোক, একটি বিষয় খুবই দুঃখজনক! হাসপাতালের ৫/৬টি টিউবওয়েল থাকা স্বত্বেও রোগীর স্বজনেরা এক বোতল পানির জন্য এ টিউবওয়েল থেকে ও টিউবওয়েল ও টিউবওয়েল থেকে ওই টিউবওয়েলে ছোটাছুটি। কিন্তু সবকটি টিউবওয়েলই অকেজো। পানির ব্যবস্থা না করতে পেরে পাশে মসজিদের টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে হচ্ছে তাদের। বিষয়টি খুবই হয়রানিদায়ক ও দুঃখজনক বটে; হাসপাতালের সামনে ঘুরে ঘুরে ৫ থেকে ৬টি টিউবওয়েল দেখতে পেলাম যা সবকটিই পরিত্যক্ত। এদিকে কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই, তাই রোগী ও রোগীর স্বজনদের জন্য একটু সহজে খাওয়ার পানির জন্য দ্রুত টিউবওয়েলগুলো মেরামত করার দাবি তুলেছেন তিনি।
ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, গত দুদিন আগে আমার স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য তাকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমার স্ত্রীর সাথে আমার শ্বাশুড়িও হাসপাতালে থেকে যান। আমার শ্বাশুড়ি নামাজ আদায়ের জন্য ওজু করতে হাসপাতাল চত্বরের টিউবওয়েল যান। সেখানে ৫/৬টি টিউবওয়েল থাকলে একটিতে পানি না পেয়ে বাধ্য হয়ে হাসপাতাল চত্বরের ১০০গজ দুরে মসজিদের টিউবওয়েলে গিয়ে ওজু করেন। পরদিন (গতকাল) সোমবার সকালে আমি হাসপাতালে গেলে তারা বিষয়টি আমাকে জানাই। আমি হাসপাতাল চত্বরে বসানো ৬টি টিউবওয়েলই গিয়ে দেখি একটিতেও পানি উঠছে না; বাধ্য হয়ে মসজিদের টিউবওয়েল থেকে পানি নিয়ে আসি। যা রোগী ও তাদের স্বজনের জন্য হয়রানিমূলক।
দামুড়হুদা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপনকৃত টিউবওয়েল নষ্ট হওয়ার বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আমাদেরকে অবগত করেনি। অবগত করলে আমরা তাৎক্ষণিক সমাধানের ব্যবস্থা করতাম।
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল শুভ বলেন, এ বিষয়ে আমরা উপজেলা পরিষদে জানিয়েছি। ওগুলো জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর স্থাপন করে দিয়েছিলো। হয়কি ও গুলো চালু হওয়ার আগেই নষ্ট হয়ে যায়। তাদেরকে মেরামতের বিষয়ে বলা হয়েছে। তারা বলে মিস্ত্রি পাঠাবো, মেরামত করে দেবো; কিন্তু তারা এখনো পর্যন্ত মেরামত করে দেয়নি। তিনি আরও বলেন, টিউবওয়েল নষ্টের বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি বা অভিযোগ করেনি। আমি উপজেলা পরিষদের মাসিক মিটিংয়ে বিষয়টি জানাবো।