দর্শনা ও জীবননগর স্থলবন্দর পরিদর্শনকালে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ও জীবননগরের দৌলৎগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কেএম তারিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সফর সঙ্গীদের নিয়ে স্থলবন্দর এলাকা ঘুরে ফিরে দেখেন। এ সময় স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থলবন্দর বাস্তবায়ন কমিটি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরিদর্শন শেষে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সরকারের অতিরিক্ত সচিব কেএম তারিকুল ইসলাম দর্শনায় সাংবাদিকদের জানান, ইতোমধ্যেই রেল যোগাযোগের মাধ্যমে দর্শনায় স্থলবন্দর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দর্শনায় পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট। এরই মধ্যে সব ধরণের কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। আমাদের পাশাপাশি ভারতেরও আন্তরিকতা রয়েছে রুটে। এখন জমি অধিগ্রহনের পালা। জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হলে দ্রুত স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু হবে। জমি অধিগ্রহণের সকল প্রক্রিয়াও চলছে বেশ জোরে-শোরে। দর্শনাবাসীর আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি আশা করছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাড়া পেলেই খুব তাড়াতাড়িই দর্শনা পূর্নাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপ নেবে।
অপরদিকে, জীবননগরে সাংবাকিদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, দৌলৎগঞ্জ স্থলবন্দর গেজেটভূক্ত একটি স্থলবন্দর। দেশে এরকম ২৪টি গেজেটভূক্ত স্থলবন্দর রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি বন্দর চালু রয়েছে। বাকীগুলো চালু প্রক্রিয়াধীন। যা পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। এখানে পরিদর্শনে এসে আপনাদের নিকট থেকে সব শুনেছি। স্থলবন্দর হওয়ার মতো স্থান এটি। প্রশস্ত রাস্তা, ইয়ার্ড, শুল্ক ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের জন্য অবকাঠামো রয়েছে এখানে। বিজিবি ও বিএসএফ ক্যাম্প রয়েছে সন্নিকটে। বন্দর হওয়ার মতো সম্পূর্ণ পজেটিভ দৌলৎগঞ্জ। দৌলৎগঞ্জ স্থলবন্দরে নাম যেহেতু গেজেটে উঠে গেছে সেহেতু যে কোনোদিন এ বন্দরটি চালু হবে। এ জন্য আপনাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে এবং ভারতের সাথে আমাদের যে বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে সেই সম্পর্কের কারণে এ বন্দরটি চালু হওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া এই বন্দরের অবস্থানগত সুবিধাও রয়েছে। এখান থেকে রাজধানী ঢাকা ও কোলকাতার দূরত্বের বিষয়টি জানলাম। বন্দরটি চালু হলে উভয় দেশ অর্থনৈতিকভাবে সুবিধা ভোগ করবে। যে কারণে আজ অথবা কাল এ বন্দুরটি চালু হবে। এ জন্য আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সাথে কথা বলবো। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ ওয়াকিং কমিটির যে মিনিং অনুষ্ঠিত হবে সেই মিটিঙে বিষয়টি তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, দর্শনা তথা এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর। দর্শনাবাসীর দীর্ঘদিনের এ স্বপ্ন পূর্ণ হচ্ছে খুব শিগ্রহে। দর্শনাকে স্থলবন্দর স্থাপনের লক্ষে জয়নগর পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কেএম তারিকুল ইসলাম। গতকাল সোমবার সকাল ১০ টার দিকে তিনি গাড়ি বহর যোগে দর্শনা কাস্টমস সার্কেল পরিদর্শনের পরপরই সাড়ে ১০ টার দিকে জয়নগর স্থলবন্দর এলাকা। সফর সঙ্গীদের নিয়ে স্থলবন্দর এলাকা ঘুরে ফিরে দেখেন। সেই সাথে তিনি সিমান্তের শূন্য রেখাও ঘুরে দেখেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব কবির খান, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাসান আলী, সহকারি প্রকৌশলী রুহুল আমীন, এ্যাস্ট্রেট অফিসার জসিম উদ্দিন, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু, দর্শনা পৌর মেয়র ও স্থলবন্দর বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মতিয়ার রহমান, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুদিপ্ত কুমার সিংহ, চুয়াডাঙ্গা সহকারি পুলিশ সুপার আবু রাসেল, দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহব্বুর রহমান কাজল, দর্শনা কাস্টমস সার্কেলের ডেপুটি কমিশনার সাফায়েত হোসেন, দর্শনা সিএ্যান্ডবি এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আতিয়ার রহমান হাবু, ইউপি চেয়ারম্যান এসএএম জাকারিয়া আলম, দর্শনা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক আরিফ, দর্শনা স্থলবন্দর বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্নআহ্বায়ক সাংবাদিক রেজাউল করিম লিটন, ওমর আলী, আশরাফুল আলম উলুম প্রমুখ। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জয়নগর স্থলবন্দর এলাকা ত্যাগ গাড়ি বহর যোগে কেরুজ ডিস্টিলারী ও চিনি কারখানা পরিদর্শন শেষে জীবননগরের চ্যাংখালীর উদ্দ্যোশে রওনা হন।