স্টাফ রিপোর্টার: দেশের দুই বিভাগ ও ছয় জেলায় বইছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ। আর একইসঙ্গে চার বিভাগে দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবীদ খো. হাফিজুর রহমানের দেয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ শুক্রবার ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। চুয়াডাঙ্গায় কয়েকদিন ধরেই মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে হাঁসফাঁস করছেন জেলার মানুষ। সকাল থেকে জেলায় থাকছে প্রখর রোদের তাপ। বেলা গড়াতে না গড়াতেই ঝাঁঝালো রোদে ঘরের বাইরে থাকা দুস্কর হয়ে পড়ছে। এতে রিকসা-ভ্যানচালকসহ নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বেশি। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরে বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। তিনি বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগের দুদিনও মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ ছিল। বুধবার বিকাল ৩টায় জেলায় ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। এরপর ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রার চলমান অবস্থা কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ। এদিকে রোদ-গরমের কারণে শহরের অনেককে গাছের নিচে কিংবা রাস্তার পাশের কোনো স্থাপনায় ছায়ায় বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। চুয়াডাঙ্গার শহীদ হাসান চত্বরের মুক্তমঞ্চে বসে বিশ্রাম নিচ্ছেলেন সদর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের আজিজ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে তীব্র রোদের তাপ। তার মধ্যেই বাজার করতে এসেছিলাম। কিন্তু আজ খুবই গরম। সহ্য করা যাচ্ছে না। হাঁপিয়ে উঠেছি। তাই এখানে বসে বিশ্রাম নিচ্ছি।
আবহাওয়া অফিস জানায়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। রাজশাহী ও খুলনা বিভাগসহ মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, দিনাজপুর এবং নীলফামারী জেলা সমূহের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামীকাল শনিবার যশোর, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলসহ রংপুর, রাজশাহী ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। আগামী রোববার রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। আগামী সোমবার রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। বর্ধিত পাঁচদিন বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।