ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে দুর্ভোগ লাঘবে আশুপদক্ষেপের আহ্বান
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়া
ডাঙ্গা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় টানা সাড়ে ৪ ঘণ্টার বৃষ্টিপাতে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলা শহরের কয়েকটি মহল্লা জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে এলাকাবাসীকে ভয়াবহ দুর্ভোগের মধ্যে ফেলেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র দ্রুত লোকবল নিয়ে পায়ঃনিষ্কাষণ নালা পরিষ্কারের কাজে নামলেও ফার্মপাড়া, বাগানপাড়া, শান্তিপাড়া, দক্ষিণ হাসপাতালপাড়াসহ পলাশপাড়ার অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে দুর্ভোগ লাঘবে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গায় সাড়ে ৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া অফিস ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
চুয়াডাঙ্গায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার পর থেকেই মূলত আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতে থাকে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই নামে বৃষ্টি। অবিরাম বর্ষণে জেলা শহরের অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বড়বাজারের নিচের বাজারসহ পুরাতনগলিতে প্যাঁচপ্যাঁচে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সমবায় নিউমার্কেটের মধ্যে জলাবদ্ধতা বিপনিবিতানগুলোর কয়েকটিতে ঢুকতে শুরু করে। পরিস্থিতি সামলাতে দোকানিদের হিমশিম খেতে হয়। দুপুরের পর দ্বিতীয় দফা অবিরাম বর্ষনের সময় পরিস্থিতি আরও ভয়বহ হয়ে ওঠে। তবে বৃষ্টি থামার পর পানি নামতে শুরু করে। বড় বড় ড্রেনে পানি দ্রুত না সরার কারণে উপচে উঠতে থাকে সড়কের ওপর। এক পর্যায়ে ইমার্জেন্সি সড়কের ড্রেনের আবর্জনা লোকবল নিয়ে মেয়রকে কাজ করতে দেখা যায়। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের একাডেমি মোড়েও বৃষ্টির সময় জলাবদ্ধতা ভয়ানক রূপ নেয়। একাডেমি মোড়, কোটমোড়সহ বড় ড্রেনসংযুক্ত এলাকার পানি বৃষ্টির পর ধীরে ধীরে নামতে শুরু করলেও পরাশপাড়া, শান্তিপাড়া, বাগানপাড়া. দক্ষিণ হাসপাতালপাড়া, ফার্মপাড়াসহ বেশ কিছু মহল্লায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে স্বাভাবিক চলাচাল করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে বৃষ্টির প্রবণতা সপ্তাহের শেষের দিকে হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে, বর্ষা মরসুমে গ্রাম-বাংলার মাঠে-ঘাটে মাছ-ধরার মজাদার দৃশ্য খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে সেটি যে শহরেও হতে পারে এমনটি খুবই কমই দেখা যায়। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে থেমে থেমে কয়েক দফা ভারী বৃষ্টিপাত হয়। তাই জেলা শহরের রেলপাড়া, কানাপুকুর পাড়া ও একাডেমির মোড়ের বেশ কয়েক জায়গায় পানি জমে সড়ক ছাপিয়ে যায়। শুধু পানিই সড়ক ছাপিয়ে যায়নি। তার সাথে পাল্লা দিয়ে ছোট ছোট মাছও সড়ক পার হতে থাকে। এ দৃশ্য দেখে এলাকার ছেলে-বুড়ো, গৃহবধূরা ছুটে আসে সেই মাছ ধরতে। কারো হাতে মশারি, কারো হতে কাপড়, কারো ঝুড়ি, কারো হাতে সরপোশ। সবাই সড়কে দাঁড়িয়ে মজা করে ধরতে থাকেন মাছ। কাদা-পানি মেখে অনেকেই ধরেছেন মাছ। তবে মাছ ধরার চেয়ে সকলে আনন্দেই মেতেছিলেন বেশি। করোনাকালীন ঘরবন্ধী জীবন থেকে বেরিয়ে যেন এক পশলা আনন্দ সকলকে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্বকে ভুলিয়ে রেখেছিলো।