স্টাফ রিপোর্টার: মঙ্গালবার চুয়াডাঙ্গার পৃথক স্থান থেকে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও স্বাস্থ্য বিভাগ অবশ্য একজনের করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তিনি বিএনপি নেতা ছিলেন। অপরদিকে মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা জেলার আরও ২২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ দিয়ে মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮শ ৯০জন। এর মধ্যে ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৪৪ জন।
জানা গেছে, করোনা উপসর্গ নিয়ে গতপরশু দুজনের পর গতকাল মঙ্গলবার আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সিনেমাহলপাড়ার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের হলুদ জোনে চিকিৎসাধীন অভস্থায় মঙ্গলবার ভোরে মারা যান। আলমডাঙ্গা মুন্সিগঞ্জের একজন কাপড় ব্যবসায়ীকে ঢাকায় নেয়ার পথে সোমবার রাতে মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বাগানপাড়া ্ও ভালাইপুরের দুজনের মৃত্যুর খবর পেলেও স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তা নিশ্চিত করা হয়নি। তবে ভালাইপুরের মারা যাওয়া ব্যাক্তির স্বাস্থ্য বিধি মেনেই দাফন কারা হয়েছে। মঙ্গলবার নতুন যে ২২ জন শনাক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে জীবননগর উপজেলা শহরের জনতা ব্যাংকেরই ৪ জন। এছাড়াও উপজেলা উপজেলার ১১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১ জন, জীবননগর হাসপাতালপাড়ার ৪জন, বাজারপাড়ার একজন, জীবননগর ঠিকানা দেয়া একজন, জীবননগর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়াডের একজন, সেনেরহুদার একজন ও বালিহুদার ২জন। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৪ জনের মধ্যে ইসলামপাড়ার ১জন, মাদরাসাপাড়ার ১জন, ডিঙ্গেদহের দুজন। আলমডাঙ্গা উপজেলার দুজনের মধ্যে মুচনাইনগরের একজন, আলমডাঙ্গা বোয়ালিয়ায় ১জন। আর দামুড়হুদার একজন। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার জানিয়েছেন, জেলা শহরের মুক্তিপাড়ার ভৈরব করোনা উপসর্গ নিয়ে গত রোববার মারা যান। তার রিপোর্ট মঙ্গলবার পাওয়া গেছে। তাতে দেখা গেছে তিনি করোনা আক্রান্ত তথা কোভিড-১৯ রোগী ছিলেন। মঙ্গলবার ভোর ৪ টায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের হলুদ জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চুয়াডাঙ্গা সিনেমাহলপাড়ার আব্দুল মান্নান। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.শামিম কবির জানান, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিনেমাহল পাড়ার মৃত ওহাব মিয়ার ছেলে আব্দুল মান্নান (৬০) বেশ কয়েকদিন ধরে সর্দি কাশি ও জ্বরে ভুগছিলেন। সোমবার রাত ১০টার দিকে শ্বাসকষ্ট বাড়লে পরিবারের সদস্যরা তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় তাকে হাসপাতালের করোনা ওয়াডের হলুদ জোনে রাখা হয়। মঙ্গলবার ভোর ৪ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। অপরদিকে আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি শোক বিবৃতিতে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার গড়চপাড়ার মৃত রবিউল ইসলামের ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী সাদরে আলম বেশ কিছুদিন ধরে সর্দি কাশি জ্বরে ভুগছিলেন। তার শ্বাস কষ্ট বাড়লে নেয়া হয় ঢাকার পথে। স্থানীয়দের অনেকেই বলেছেন, বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা চলছিলো। ঢাকায় নেয়ার পথে সোমবার রাতে মারা গেলে মৃতদেহ নেয়া হয় নিজ গ্রামে। তিনি মুন্সিগঞ্জের কাপড় ব্যবসায়ী ছিলেন। এছাড়া গতকাল চুয়াডাঙ্গা বাগানপাড়ার একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাকেও গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, তিনি হৃদরোগে মারা গেছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগসূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে ছিলেন ৪৬ জন। হোম আইসোলেশনে ছিলেন ৩শ ৮৩ জন। মঙ্গলবার আরও ৭ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ৪শ ৪৪ জন।