স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ২৮ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রাথমিকভাবে বৈধ এবং সাধারণ সদস্য পদে পাঁচ প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে ত্রুটি থাকায় বাতিল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। গতকাল রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে জেলা প্রশাসক এ ঘোষণা দেন।
এ সময় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তারেক আহমেমদ ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কামরুল হাসান এবং প্রার্থী, প্রস্তাবকারী ও সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনে যাচাই-বাছাইকালে পাঁচ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তারা হলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১নং ওয়ার্ডে (চুয়াডাঙ্গা সদর) সাধারণ সদস্য পদে মো. মিরাজুল ইসলাম কাবা জেলা পরিষদের ঠিকাদার হওয়ায় এবং আব্দুর রউফ মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য গোপন করায়, ২নং ওয়ার্ডে (আলমডাঙ্গা উপজেলা) সাধারণ সদস্য পদে এএইচএম মোয়াজ্জেম জেলা পরিষদের ঠিকাদার হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ২নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে মো. খলিলুর রহমান মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য গোপন করায় মনোনয়নপত্রটিও বাতিল করা হয়। ৪নং ওয়ার্ডে (জীবননগর উপজেলা) সাধারণ সদস্য পদে মাহবুবুর রহমান ছটকু ব্যাংকের ঋণ খেলাপী হওয়ায় তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়।
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে তারা ইচ্ছে করলে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করতে পারবেন। আপিল করতে হলে রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে বাতিলের কারণ সংগ্রহ করে খুলনা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবেদন করতে পারবেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ আবেদন করা যাবে। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করা হবে।
এদিকে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন রয়েছে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বেলা ১০টায় প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। ১৭ অক্টোবর ইভিএমএ ভোটগ্রহণ করা হবে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩৩ প্রার্থীর মধ্যে চার চেয়ারম্যান, ১০জন সংরক্ষিত সদস্য এবং ১৭জন সাধারণ স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন। সাধারণ সদস্য পদে ৩নং ওয়ার্ডের (দামুড়হুদা উপজেলা) লস্কর আলী ও ৪নং ওয়ার্ডে (জীবননগর উপজেলা) সদস্য পদে মাহবুবুর রহমান ছটকু এ সময় উপস্থিত ছিলেন না।
চেয়ারম্যান পদে সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ সামসুল আবেদীন খোকন, সাবেক প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মনজু ও আরেফিন আলম রঞ্জু বাছাইকালে পাশাপাশি বসে ছিলেন। অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মুফতি আব্দুস সালাম একটু দূরে বসে ছিলেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে ১নং ওয়ার্ডের (চুয়াডাঙ্গা সদর) প্রার্থীরা হলেন চুয়াডাঙ্গা শহরের পুরাতন হাসপাতালপাড়ার শহিদুল ইসলাম সাহান, নীলমণিগঞ্জ গ্রামের মাফলুকাতুর রহমান ও শ্রীকোল গ্রামের জহুরুল ইসলাম ।
সংরক্ষিত সদস্য পদে ১নং ওয়ার্ডে (চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা) প্রার্থীরা হলেন আলমডাঙ্গার বগাদী গ্রামের কাজল রেখা, শিবপুর গ্রামের মনিরা খাতুন, এরশাদপুরের সামশাদ রানু, জাহাপুরের বিথী খাতুন ও বোয়ালিয়া গ্রামের হাসিনা খাতুন।
২নং ওয়ার্ডের (আলমডাঙ্গা উপজেলা) সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থীরা হলেন আলমডাঙ্গার বলেশ্বরপুরের আলতাব হোসেন, বৈদ্যনাথপুরের মিজানুর রহমান, পোয়ামারী গ্রামের মজনুর রহমান, এরশাদপুরের জাফর উল্লাহ এবং মধুপুরের তপন কুমার বিশ্বাস ।
সংরক্ষিত সদস্য পদে ২নং ওয়ার্ডে ( দামুড়হুদা ও জীবননগর) প্রার্থীরা হলেন জীবননগরের শিরিনা পারভিন ও জীবননগরের কহিনুর বেগম, জীবননগরের সোনদাহ গ্রামের নাহার বানু, দামুড়হুদার দলিয়ারপুর গ্রামের আদুরী খাতুন ও পীরপুরকুল্লা গ্রামের ইয়াসমিন খাতুন।
৩নং ওয়ার্ডে (দামুড়হুদা উপজেলা) সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থীরা হলেন দশমী গ্রামের শফিউল কবির, হরিশচন্দ্রপুরের লস্কর আলী ও সাড়াবাড়িয়া গ্রামের অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম ।
৪নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে (জীবননগর উপজেলা) প্রার্থীরা হলেন জীবননগরের আলীপুরের মিতা খাতুন, গঙ্গাদাসপুরের মোসাবুল ইসলাম লিটন ও হাসাদহ গ্রামের কবির আহম্মদ।
প্রসঙ্গত: চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একজন, সদস্য পদে চারজন এবং সংরক্ষিত সদস্য (মহিলা) পদে দুইজন নির্বাচিত হবেন। স্থানীয় সরকারের মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও ইউপি সদস্যবৃন্দ নির্বাচিত ৫৬৭জন জনপ্রতিনিধি ভোট প্রদান করবেন। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে।