চুয়াডাঙ্গায় ৬৯ নমুনা পরীক্ষায় ৬৪ করোনা শনাক্ত : আরও ৫ জনের মৃত্যু

কঠোর বিধি-নিষেধের স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনেকটা গা ছাড়াভাব : নানা অজুহাতে রাস্তায় বের হচ্ছে মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু এবং শনাক্তের হার। দিন দিন পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানছে না অধিকাংশ মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন করে আরও ৬৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৯২.৭৫ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৮৯ জনে।
এদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা, আলুকদিয়া ইউনিয়ন, দামুড়হুদা এবং জীবননগর উপজেলায় লকডাউন চলছে। কঠোর বিধি-নিষেধের প্রথম দিন কিছুটা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও তারপর অনেকটা গা ছাড়াভাবে চলছে মানুষজন। যদিও প্রশাসনের তৎপরতার কমতি নেই। লকডাউনেও নানা অজুহাতে মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছে। প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে পাড়া-মহল্লার দোকানপাট বেশির ভাগ খোলা থাকে। ফলে, এখানে সংক্রমণ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে ৬৯টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসে। এর মধ্যে শনাক্ত হয় ৬৪ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২ হাজার ৭৯৬ জনে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলার ২২ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ১০জন, আলমডাঙ্গার ১০জন এবং জীবননগরের ২২ জন রয়েছে। এদিন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন করে ২৪২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট ল্যাবে পাঠিয়েছে। এ নিয়ে মোট ১ হাজার ২৮৯ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল এসেছে ১১ হাজার ৬২৭ জনের। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে একজন সদর উপজেলার, দুইজন দামুড়হুদা উপজেলার এবং দুইজন জীবননগর উপজেলার বাসিন্দা। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯ জনে দাঁড়ালো। এ পর্যন্ত জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৭৯ জনের ও জেলার বাইরে ১০ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে কেউ সুস্থ হয়নি। তবে জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৩৮ জন।বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ৬৮৭ জন। তার মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ২৫৪ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৮৭জন, দামুড়হুদা উপজেলায় ২১৮ জন এবং জীবননগর উপজেলায় ১২৮জন রয়েছে। সদর উপজেলার ২৫৪ জনের মধ্যে ২১জন হাসপাতালে, ২৩৪ জন বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং একজনকে রেফার্ড করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা উপজেলার ৮৭ জনের মধ্যে ৭৯ জন বাড়িতে, ৭ জন হাসপাতালে এবং একজনকে রেফার্ড করা হয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলার ২১৮ জনের মধ্যে বাড়িতে ২০জন, হাসপাতালে ১৬ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং রেফার্ড করা হয়েছে দুইজনকে। জীবননগর উপজেলার ১২৮জনের মধ্যে ৯জন হাসপাতালে এবং ১১৯জন বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। এদিকে খোদ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেই মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। বহির্বিভাগে রোগীদের উপচেপড়া ভীড় হলেও তাদের মাঝে নেই সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে জনবলের অভাবে বহির্বিভাগে সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না।

Comments (1)
Add Comment
  • রোকসানা

    চুয়াডাঙ্গা সদরে সংক্রমিতদের এলাকার নাম বলে দিলে ভালো হয়।