বাড়িতে ডেকে নগ্ন ভিডিও করে চাওয়া হতো মুক্তিপণ : টাকা আদায়ে চলাতো নির্যাতন
স্টাফ রিপোর্টার: প্রথমে সহজ সরল ও বয়স্ক ব্যক্তিদের টার্গেট করে পরিচয় আদান প্রদান। তারপর সখ্যতায় গড়ে উঠতো প্রেম বা বন্ধুত্বের সম্পর্ক। এরপর বাসায় নিমন্ত্রণ। বন্ধুত্ব বা প্রেম ভেবে যারাই নিমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বাসায় গেছে, তারাই হয়েছে প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার। প্রেম প্রতারণার অভিনব ফাঁদে পড়ে অনেকে খুইয়েছে লাখ লাখ টাকা। আবার কাক্সিক্ষত পরিমাণ টাকা না পেলে অনেককে বাড়িতেই নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। নগ্ন ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে এবং জিম্মি করে মুক্তিপণও আদায় করতো চক্রটি। চুয়াডাঙ্গা শহরের দক্ষিণ হাসপাতালপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে এসব কা- করে এসেছেন চক্রটি। সম্প্রতি একটি অভিযোগের ছায়া তদন্ত করতে গিয়ে ওই চক্রের এক নারীসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুলচারা গ্রামের আমজেদের মেয়ে রেখা খাতুন (৩০) ও পৌর এলাকার সুরত আলীর ছেলে আলীহিম (২১)। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চক্রটি প্রথমে গ্রেফতারকৃত রেখা খাতুনকে দিয়ে পুরুষ মানুষকে প্রেমের ফাঁদে ফেলতো। তিনি চুয়াডাঙ্গায় বেসরকারি এনজিওতে চাকরি করেন। প্রতারণার জন্য তার আলাদা একটি চক্রও আছে। চক্রের বাকি সদস্যরা পুুরুষ। রেখা সহজ সরল এবং অপেক্ষাকৃত বয়স্ক লোকদের সাথে প্রেম করতেন। এরপর তাদের বাসায় নিয়ে আসতেন। বাসায় এলেই চক্রের পুরুষ সদস্যরা মারধর করে তার মোবাইল ও টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়া হতো। এরপর নগ্ন ভিডিও করে তা ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করতেন।
সম্প্রতি, মঙ্গলবার দুপুরে ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার দক্ষিণপাড়াস্থ একটি ভাড়া বাড়িতে জিম্মি করে চক্রটি। তারপর টাকা আদায়ে করা হয় নির্যাতন। পরে ওই বৃদ্ধ তার পরিচিতদের সাথে যোগাযোগ করে বিকাশ এবং নগদের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা তাদের দেন। পরে সেখান থেকে মুক্তি পেয়ে সাথে সাথে পুলিশকে জানান। অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাতেই চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ দক্ষিণ হাসপাতালপাড়ায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে। পরে ভুক্তভোগী বৃদ্ধ ওই চক্রের চারজন সদস্যের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, সহজ সরল ও বয়স্কদের টার্গেট করতো চক্রের নারী সদস্য। পরে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জিম্মি করে নগদ টাকা চাওয়া হতো। টাকা দিতে অস্বীকার করলে চলতো নির্যাতন। আবার জিম্মি করে মুক্তিপণ ও চাইতেন তারা। এ ঘটনায় একটি মামলা করেছে ভুক্তভোগী। নারীসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।