অভিযানের খবরে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে পালিয়ে গেলেন মালিকরা : ৫টির কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় অনিবন্ধিত এবং নবায়নবিহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সদর হাসপাতাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান। বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় ৫ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল রোডের সেন্ট্রাল মেডিকেল সেন্টার, তিশা এক্সরে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চুয়াডাঙ্গা আল্ট্রাসনোগ্রাফি, আমাদের সনো ও ইসলামি হাসপাতালের ‘ইসলামি ডায়াগনস্টিক’ সেন্টার এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ইসলামি হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক মালিকানা পরিবর্তন জনিত কাগজ না আসা পর্যন্ত তাদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে মৌখিকভাবে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অভিযানের খবরে অবৈধ প্রতিষ্ঠান মর্ডান প্যাথলজি, ডিজিটাল মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও এপ্যোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ রেখে পালিয়ে যান মালিকরা।
আর আগে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নিকট অনিবন্ধিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোন তালিকা ছিলো না। গত শনিবার দৈনিক মাথাভাঙ্গায় পত্রিকায় ‘চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে নিবন্ধিত ক্লিনিকের সংখ্যা ৫৬ ও ৮১ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, অনিবন্ধিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা কতো জানে না স্বাস্থ্য বিভাগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। তড়িঘড়ি করে অনিবন্ধিত ও নবায়নবিহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা প্রস্তুত করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে নিবন্ধিত ক্লিনিকের সংখ্যা ৫৬ ও ৮১ ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এর মধ্যে ১৭ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিবন্ধন নবায়ন নেই সেগুলো হলো- চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এলাকার নিরাময় নার্সিং হোম, হেলথ এইড মেডিকেল সেন্টার, ইসলামী হাসপাতাল, মদিনা ক্লিনিক, ভালাইপুরের শান্তি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, দামুড়হুদা উপজেলা কার্পাসডাঙ্গার লাইফ কেয়ার মেডিকেল সেন্টার, গ্রামীণ নার্সিং হোম ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সেবা ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোম, নূরানী সনো সেন্টার, জীবননগর হাসপাতাল এলাকার ইসলামি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফাইভ স্টার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সময় ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জননী ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আলমডাঙ্গার গ্রামীণ কল্যাণ, আসলামানখালী হেলথ সেন্টার, গ্রামীণ কল্যাণ জামজামি হেলথ সেন্টার।
অপরদিকে, জেলায় অনিবন্ধিত (অবৈধ) ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ১৩। সেগুলো হলো- চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এলাকার এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মর্ডান প্যাথলজি, ডিজিটাল মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সেন্ট্রাল মেডিকেল সেন্টার, রংধনু আল্ট্রাসনোগ্রাফী সেন্টার, চুয়াডাঙ্গা আল্ট্রাসনোগ্রাফী, ইসলামি হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক সেন্টার, দামুড়হুদা আটকরবের বাবা-মা ডায়াগনস্টিক এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টার, আটকবর ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, দামুড়হুদা ডায়াবেটিক সেন্টার, জীবননর আন্দুলবাড়িয়ার মেঘনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও আলমডাঙ্গার হাউসপুরের পদ্মা ক্লিনিক।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, গতকাল শনিবার ২৫ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অভিযান চালানো হয়েছে। বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় পাঁচ প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অভিযানের সময় বন্ধ করে পালিয়ে যাওয়া তিন প্রতিষ্ঠানের বৈধ কাগজ না থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ অভিযান চলমান থাকবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. তারেক জুনায়েত প্রমুখ।