স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জে কামাল হোসেন (৬৫) নামে এক বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ক্লিনিকপাড়ায় ফেলে রাখে ঘাতক স্বাধীন ও তার সহযোগিতারা। পরে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে আসে। সেখান থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠালে পথের মধ্যেই তিনি মারা যান।
নিহত কামাল হোসেন আলমডাঙ্গা উপজেলায় জেহালা গ্রামের মাঝেরপাড়ার মৃত জাহান আলী মাস্টারের ছেলে। তিনি বিএনপির নেতা ছিলেন। বর্তমানে ঠিকাদারির কাজ করতেন।
জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জে ক্লিনিকপাড়ার মৃত মোতালেব হোসেনের জামাই স্বাধীনের সাথে দীর্ঘদিন যাবত কামাল হোসেনের শরিকানা জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল সকালেও দুজনের মধ্যে গ-গোল হয়। রাত ১০টার দিকে ক্লিনিকপাড়ায় স্বাধীনের শ্বশুরবাড়ির সামনে থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা কামালকে উদ্ধার করে। পরে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় প্রতিজ্ঞা ক্লিনিকে নিয়ে যায়। অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। পরে সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে ঘটনার পর স্বাধীন পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে। পুলিশের দাবি, দুর্বৃত্তরা কামাল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তবে নিহতের স্ত্রী সেলিনা খাতুন বলছেন, ক্লিনিকে নেয়ার পর তার স্বামী স্বাধীনের নাম বলেছেন। তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী সেলিনা খাতুন বলেন, আমার স্বামীর সাথে শরিকানা জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল স্বাধীনের। এরই জের ধরে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে স্বাধীন। মৃত্যুর আগে জিজ্ঞাসা করতেই স্বাধীন মেরেছে বলে আমাকে জানায়। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, আমার দুই ছেলে-মেয়ে। ছেলে সাদবিন কামাল বিবিএ পড়ছে। মেয়ে নাসরিন আক্তারও পড়াশোনা করছে। এখন দুই সন্তানকে নিয়ে আমি কোথায় যাবো? তাদেরকে দেখবে কে বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরিফুজ্জামান শরীফ বলেন, কামাল হোসেন বিএনপির সক্রিয় নেতা ছিলেন। তবে তার কোনো পদ ছিলো না। তার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আহসানুল হক দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, তার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো। এছাড়াও বাম পায়ে ধারালো অস্ত্রের কোপ আছে। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যু প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল আলিম বলেন, রাতে দুর্বৃত্তরা তাকে পিটিয়ে ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়রা প্রথমে একটি ক্লিনিলে নেয়; পরে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা হত্যাকারীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছি।