গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীর চাঞ্চল্যকর আলমগীর হত্যায় সরাসরি জড়িত ৩ আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। র্যাব-১২ গাংনী ক্যাম্পের একটি টিম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এদেরকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করে। পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে গ্রেফতারকৃতরা। এরা হচ্ছেন চৌগাছা গ্রামের রইচ উদ্দিনের ছেলে ও গাংনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বিপ্লব (৩৬), বাঁশবাড়িয়া পশ্চিমপাড়ার আব্দুল আউয়ালের ছেলে যুবদল নেতা মফিকুল ইসলাম (৩৯) ও কোদাইলকাটি গ্রামের জামাত আলীর ছেলে আলমগীর (৪০)। গ্রেফতার ৩জনকে গতকাল শুক্রবার সকালে গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হলে পুলিশ তাদেরকে মেহেরপুর আদালতে প্রেরণ করে।
র্যাব-১২ গাংনী ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফ উল্লাহ পিপিএম জানান, গাংনী থানাধীন বাঁশবাড়িয়া উত্তরপাড়ার মহিউদ্দিনের ছেলে ও গাংনী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আলমগীরকে বুধবার দিবাগত রাতে ষোলটাকা ইউনিয়নের সহড়াবাড়িয়া ইছাখালি মাঠে জবাই করে হত্যা করে দুবৃর্ত্তরা। এ ঘটনায় গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। ঘটনার পরপরই হত্যাকারীদের গ্রেফতারে মাঠে নামে র্যাব। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় খুনিদের পরিচয় ও অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, প্রায় ৪ বছর আগে নিহত আলমগীর আসামি মফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার হিসেবে গ্রহণ করেন। এ টাকা ফেরত না দিয়ে বছর দেড়েক আগে তিনি বিদেশ চলে যান। কিছুদিন আগে আলমগীর দেশে ফেরত আসেন। বারবার টাকা ফেরত চাইলেও তিনি টাকা দিতে গড়িমশি করেন। বিষয়টি মফিকুল তার বন্ধু রবিউল ইসলাম বিপ্লব ও অপর আসামি আলমগীরকে জানায়। সকলে নিহত আলমগীরের কাছ থেকে টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে খুনের পরিকল্পনা করে।
আসামি রবিউল ইসলাম বিপ্লব নিহত আলমগীরকে টাকা ধার দেয়ার কথা বলে বুধবার সন্ধ্যায় ডেকে নিয়ে মফিকুলসহ মড়কা বাজারে যায়। সেখানে অবস্থানরত অপর আসামি আলমগীর ও তার একজন সঙ্গীকে আলাদা একটি মোটরসাইকেলযোগে সহড়াবাড়িয়া ইছাখালী মাঠে যায়। মফিকুলের নিকট হতে ধার নেয়া টাকা ফেরত চাইলে আলমগীরের সাথে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আসামিরা সকলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আলমগীরের মাথায় আঘাত করে মুখ এবং হাত পা বেধে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে। তারা আলমগীরের মরদেহটি একটি বাবলা গাছের গোড়ায় বেধে রেখে চলে আসে। পরিকল্পনা অনুযায়ী খুনের ঘটনাকে অন্য দিকে প্রবাহিত করার জন্য একটি চিরকুট লিখে আলমগীরের মরদেহের পাশে রেখে আসে। আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বানি ইসরাইল বলেন, র্যাব আলমগীর হোসেন হত্যায় অভিযুক্ত তিন আসামিকে গাংনী থানায় হস্তান্তর করেছে। তাদের নামে গত বৃহস্পতিবার নিহতের ভাই ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।