স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে জেলায় করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৯ জন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গাতেই ৫৩ জন ও চুয়াডাঙ্গার বাইরে ৬ জনের মৃত্যু হয়। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছিলো ৫৮ জন। মঙ্গলবার আরও ১৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পলি সু’র স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল ওয়াদুদ বিশ^াস গত ৫ মে পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। তার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পরদিন ৬ মে কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া যায়। ওইদিনই রাত ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের রেডজোনে ভর্তি হন। আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। বাড়তে থাকে শ^াসকষ্ট। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা ২৫ মিনিটের দিকে মৃত্যুবরণ করে। আব্দুল ওয়াদুদ বিশ^াস চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের পোষ্ট অফিসপাড়ার মৃত আব্দুল ওয়াজেদ বিশ^াসের ছেলে। গতকালই বাদ জোহর স্বাস্থ্য বিধি মেনে নামাজে জানাজা শেষে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়। এদিকে মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে পূর্বে প্রেরিত কোন নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসেনি। এদিন নতুন ১৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করা হয়। এ নিয়ে জেলায় মোট ৯ হাজার ৪শ ৩৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হলো। এর মধ্যে পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে ৯ হাজার ২শ ৩ জনের। করোনা সংক্রমিত রোগী হিসেবে শনাক্ত হয়েছে মোট ১ হাজার ৮শ ৮৮ জন। মঙ্গলবার আরও ৩ জন সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হলেন ১ হাজার ৭শ ৭১ জন। জেলায় সক্রিয় ৫৮ জন রোগীর মধ্যে সদর উপজেলার ২৫ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ৬ জন, দামুড়গহুদা উপজেলার ১৪ জন, জীবননগর উপজেলার ১৩ জন। দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার রোগী নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে থাকলেও সদর উপজেলার ১৫ জনের মধ্যে ১৯ জন বাড়িতে ৩ জন হাসপাতালে ৩ জন ঢাকায় রেফার্ড রয়েছেন। আলমডাঙ্গা উপজেলার ৬ জনের মধ্যে একজন হাসপাতালে বাকি ৫ জন নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। অপরদিকে রোববার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার ৮টা পর্যন্ত দেশে ১৪ হাজার ১শ ৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ২শ ৩০ জন নতুন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৪৪ জন। মারা গেছেন ৩৩ জন। এ নিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৫ জনে।
ঈদের কেনা কাটায় যেমন মানা হচ্ছে না শতভাগ স্বাস্থ্য বিধি, তেমনই দূরে থাকা কর্মজীবী মানুষ দূর দূরান্ত থেকে হুড়োহুড়ি করে বাড়ি ফিরছেন। দৃশ্য দেখে বড়ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন অভিজ্ঞ মহল। প্রতিবেশী দেশ ভারতে গণহারে যেমন সংক্রমিত হচ্ছে, তেমনই মারা যাচ্ছে বহু মানুষ। সতর্ক না হলে সমাজে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা।