আড়াই কেজি সোনাসহ নারী আটক : ৭৮ কেজি রুপোর গয়না উদ্ধার

দর্শনার মোবারকপাড়া ও নাস্তিপুর গ্রামে বিজিবির চোরাচালান বিরোধী পৃথক অভিযান

দর্শনা অফিস: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় বিজিবি পৃথক অভিযান চালিয়ে ২০টি সোনার বার ও ৭৮ কেজি রুপোর গয়না উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় শাহানারা খাতুন নামের এক নারী পাচারকারীকে আটক করেছে বিজিবি। গতকাল বুধবার দামুড়হুদা উপজেলার নাস্তিপুর গ্রামে ও দর্শনা পৌর এলাকার মোবারকপাড়া অভিযান চালায় বিজিবি। আটক শাহানারা খাতুন (৪৮) দামুড়হুদার নাস্তিপুর গ্রামের মৃত কাশেম আলীর স্ত্রী। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা স্বর্ণের বারগুলোর ওজন ২ কেজি ৩৪১ গ্রাম। এ সময় বিজিবি শাহানারার কাছ থেকে একটি মোবাইলফোনও জব্দ করে। অপরদিকে, মোবারকপাড়ার একটি বাড়ি থেকে প্রায় ৭৮ কেজি রুপোর গয়না উদ্ধার করলেও কৌশলে পালিয়েছে চোরাকারবারী সোহাগ। থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে বিজিবি।

বিজিবি পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি বারাদী সীমান্ত চৌকির (বিওপি) সদস্যরা গতকাল বুধবার দুপুরে দামুড়হুদার উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামের জোড়া কবরস্থান এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ২০টি সোনার বারসহ শাহানারা খাতুন নামের এক নারীকে আটক করে বিজিবি। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা স্বর্ণের বারগুলোর ওজন ২ কেজি ৩৪১ গ্রাম। শাহানারা দামুড়হুদার নাস্তিপুর গ্রামের মৃত কাশেম আলীর স্ত্রী। এ সময় বিজিবি শাহানারার কাছ থেকে একটি মোবাইলফোনও জব্দ করে। গতকাল বুধবার সন্ধায় চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি অধিনায়ক ও পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তিনি জানান, বারাদী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে স্বর্ণ চোরাচালান হচ্ছে এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বারাদী বিওপি কমান্ডার নায়েব সুবেদার আহসান কবীর সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সীমান্ত পিলার ৭৯/৬-আর থেকে আনুমানিক এক কিলোমিটার বাংলাদেশের ভেতরে নাস্তিপুর গ্রামের জোড়া কবরস্থান এলাকায় অবস্থান করে। দুপুর ১টার দিকে একটি অটোরিকশা দর্শনা থেকে নাস্তিপুর সীমান্তের দিকে যেতে দেখলে রিকশাটির গতিরোধ করে বিজিবি সশস্ত্র টহল দল। এ সময় অটোরিকশায় থাকা যাত্রীদের মধ্যে শাহানারা নামে একজন বোরকা পরিহিত নারীকে সন্দেহ হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছে কোনো চোরাচালানী পণ্য নেই বলে বিজিবিকে জানান। কিন্তু সন্দেহ হওয়ায় বিজিবি টহল দলের নারী সদস্যরা শাহানারার শরীর তল্লাশি করলে স্কসটেপ দিয়ে মোড়ানো দুটি প্যাকেট থেকে ২ কেজি ৩৪১ গ্রাম ওজনের ২০টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। জব্দ বারগুলোর আনুমানিক বাজার মূল্য ২ কোটি ৩৪ লাখ ১২ হাজার। তিনি আরও জানান, স্বর্ণের বারগুলোর শুল্ক কর ফাঁকি দিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশে পরিবহন করা ও নিজ জিম্মায় রাখার অপরাধে অভিযুক্ত নারী শাহানারাকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় হাবিলদার মো. ওবাইদুর রহমান দর্শনা থানায় একটি মামলা করে আটক আসামিকে হস্তান্তর করেছেন। একইসঙ্গে উদ্ধার সোনার বারগুলো চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারি অফিসে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লে. কর্ণেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে গতকাল বুধবার বেলা ৫টার দিকে চোরাচালান বিরোধী অভিযান চালান দর্শনা পৌর এলাকার মোবারকপাড়ায়। বিজিবি সদস্যরা মোবারকপাড়া গোরস্থান মোড়ের মোস্তফা আলীর বসতবাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালান। এ অভিযানে ৪টি বস্তাভর্তি ৭৭ কেজি ৭শ গ্রাম ওজনের রুপোর গয়না উদ্ধার করা হয়েছে। এ চালানের সাথে উদ্ধার করা হয়েছে একটি মোটরসাইকেল। উদ্ধারকৃত রুপোর গয়নার আনুমানিক বাজার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ টাকা। বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ওই বাড়িতে রুপোর চালান ফেলে আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায় মোস্তফার প্রতিবেশী বাবু আলী ওরফে গদার ছেলে সোহাগ (৩৪)। এ ঘটনায় দর্শনা বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার জহির উদ্দিন বাবর বাদী হয়ে গতকালই সোহাগকে পালাতক আসামি করে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। উদ্ধারকৃত রুপোর গয়না গতরাত পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারি অফিসে জমার প্রক্রিয়া চলছিলো। তবে একইদিন সোনা ও রুপোর দুটি বড় চালান উদ্ধারের পর থেকে অনেক চোরাকারবারীই গাঢাকা দিয়েছে।

Comments (0)
Add Comment