স্টাফ রিপোর্টার: দর্শনা শহর দুদিন শান্ত থাকলেও ফের অশান্ততে রূপ নিয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে ধারালো অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে বিএনপির এক পক্ষের কর্মীরা। গোটা শহর জুড়ে বিরাজ করেছে আতঙ্ক। কুপিয়ে জখম করা হয়েছে কৃষকদল নেতা হাতেম আলীসহ ৩জনকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়েছে। দুজনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়েছে। হাতেম আলীকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন ও সদস্য সচিব তবারক হোসেন।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে আনন্দবাজার কেরুজ পূজা মন্দিরের সামনের একটি দোকানে বসে চা পান করছিলেন জেলা কৃষকদলের সদস্য হাতেম আলী। এ সময় মাথায় হেলমেট পরিহৃত অজ্ঞাত ২জন আকস্মিক হানা দেয় হাতেমের ওপর। কিছু বুঝে উঠার আগেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হাতেমকে জখম করে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে দর্শনার সাবেক সেনা সদস্য ও সেনাবাহিনীর অধিকার পরিষদের দামুড়হুদা শাখার সভাপতি আব্দুস সালাম ও যুবদল সমর্থক সাব্বির হোসেনকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কেরুজ চিনিকল এলাকায় অভিযান চালিয়ে যুবদলের দুই জনকে আটক করেছে। দুপুর ১টার দিকে বিএনপির আরেকটি পক্ষের কর্মীরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দেয় কেরুজ এলাকায়। এতে গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয় কেরুজ এলাকায়। এ সময় পুলিশ সন্দেহজনকভাবে আটক করেছে যুবদল নেতা মাহাবুল হোসেন (৪২) ও আরুক হোসেনকে (৪০) আটক করা হয়। তবে আটককৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা কেরুজ চিনিকলের শ্রমিক। কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে পুলিশ তাদের আটক করেছে। দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয়ক কমিটির প্রধান হাবিবুর রহমান বুলেট বলেন, দলের মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরেই অনাকাক্সিক্ষত কিছু ঘটনা ঘটেই চলেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে একই ঘটনার খবর শুনেছি। যা অপ্রত্যাশিত। তবে অচিরেই এ সমস্যা নিরসনে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করা হবে। কেরুজ চিনিকলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান বলেছেন, চিনিকল এলাকায় সহিংস ঘটনার জন্য জেলা পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীকে জানানো হয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ কারো বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেছে কিনা তা জানা যায়নি। তাছাড়া কেরুজ এলাকায় কোনো প্রকার সহিংসতার ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা হলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমির ও চুয়াডাঙ্গা সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা জানান, এ অভিযান চলমান থাকবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনি ব্যবস্থা প্রয়োগ করা হবে।
এদিকে, জেলা কৃষকদলের সদস্য হাতেম আলীকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন ও সদস্য সচিব তবারক হোসেন। যৌথ প্রতিবাদলিপিতে বলেন, দর্শনা আনন্দবাজার মন্দিরের সামনে যুবলীগের সশস্ত্র ক্যাডার আরিফুল ও রানা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতরা যখম করে। এই নাক্কারজনক ঘটনায় জেলা কৃষকদল নিন্দা জ্ঞাপন করছে এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। দোষীদেরকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।