স্টাফ রিপোর্টার: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ছয় মাসেরও বেশি সময় পর রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ফেব্রুয়ারির শুরুর দিন থেকে হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। তবে প্রশ্ন উঠেছে, গত নভেম্বরে প্রথম বার মাঠে নামার ঘোষণা দিলেও পুরোপুরি ব্যর্থ হয় দলটি। কর্মসূচির দিনে তাদের তেমন কোনো উপস্থিতিই কোথাও চোখে পড়েনি। এবার তারা কর্মসূচি দিলেও মাঠে থাকবে তো? গতকাল মঙ্গলবার রাতে দলটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদত্যাগ ও ‘অপশাসন-নির্যাতনের প্রতিবাদে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ও ১৮ ফেব্রুয়ারি হরতালের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেখানে পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকেই মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার পর্যন্ত দাবির লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি করবে দলটি। ৬ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার দেশে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ১০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। আর ১৬ ফেব্রুয়ারি রোববার অবরোধ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক ‘কঠোর’ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ অন্যান্য মামলা প্রত্যাহার এবং প্রহসনমূলক বিচার বন্ধেরও দাবি জানানো হয়। এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছে ক্ষমতাচ্যুত দলটি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বেশির ভাগ নেতাকর্মী গা ঢাকা দেন। তাদের অনেকেই পাশের দেশ ভারতে পালিয়ে গেছেন। গ্রেফতারও হয়েছেন শত শত। গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে কয়েক শ মামলা হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর প্রথমবার ১০ নভেম্বর নূর হোসেন দিবসে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। শহীদ নূর হোসেনের পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবিও সঙ্গে নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল৷ শেখ হাসিনা জানান, ট্রাম্পের ছবি নিয়ে মিছিলে বাধা দিলে সেই ছবি যেন ভালো করে তুলে রাখা হয়। তিনি সেই ছবি ট্রাম্পের কাছে পাঠাবেন, কারণ তার ট্রাম্পের সঙ্গে লিঙ্ক আছে। তবে ১০ নভেম্বর জিরো পয়েন্টের কাছেও ভিড়তে পারেনি আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী। দিনভর স্থানটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিরোধীদের দখলে ছিল। অনেকে এটাকে জিরো পয়েন্টে আওয়ামী লীগের জিরো পারফরম্যান্স হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এরপর ব্যাপক ধরপাকড়ের মুখে অনেকটা চুপসে যায় আওয়ামী লীগ। অনলাইনে গুজব ছড়ানো ছাড়া তাদের কোথাও সক্রিয় দেখা যায়নি। এবার প্রথমবারের মতো হরতাল-অবরোধ দিয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিলো আওয়ামী লীগ। তবে দলটির নেতারা যেভাবে নিজেদের গা ঢাকা দিয়েছেন তাতে কর্মসূচি কতোটা সফল হবে সেটা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ।