স্টাফ রিপোর্টার: সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের বিষয়ে বিদেশি বন্ধুদের আশ্বস্ত করার দরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। এটি সরকারের মাথা ব্যথার কারণ নয় এবং জনগণ না চাইলে আওয়ামী লীগ জোর করে রাজত্ব চাইবে না বলেও জানান তিনি। সোমবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিদেশে সরকারের আইনের শাসন, গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত বিষয়গুলো নিয়ে অপপ্রচার ঠেকাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি ‘সমন্বয় কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। বিদেশে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ঠেকাতে বাংলাদেশের দূতাবাস ও হাইকমিশনগুলোতে বৈঠক করে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। বাংলাদেশ মিশনগুলোর প্রধানদের নির্দেশনা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দেয়। তাহলে আপনারা (রাষ্ট্রদূতরা) চুপ করে ঢাকার দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। মন্ত্রণালয় আপনাকে নির্দেশনা দিল, তখন আপনারা এর উত্তর দেবেন। এর জন্য বসে থাকলে চলবে না। আপনি (রাষ্ট্রদূত) একজন দায়িত্বশীল মানুষ। সরকার আপনাকে সর্বচ্চো কাজ দিয়েছে। আপনি দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন। কেউ অপপ্রচার চালারে আপনি তাৎক্ষণিক উত্তর দেবেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার জন্য অপেক্ষার যে পুরাতন অনুশীলন রয়েছে, তা ভুলে যান।’
রাষ্ট্রদূতরা এর উত্তরে কী জানিয়েছেন- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রদূতদের উপদেশ দিয়েছি। বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে উত্তর দিয়েছেন।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে অপপ্রচার রোধে ‘সমন্বয় কমিটি’ গঠন করা হলো কি না জানতে চাইলে ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, ‘নির্বাচনের বহুদিন বাকি। দুনিয়ার অন্যান্য দেশে নির্বাচনের আমেজ শুরু হয় ২ মাস আগে। বাংলাদেশে কি ঢং, একবছর আগেই হৈচৈ শুরু হয়ে যায়। আমরা নির্বাচন নিয়ে এত চিন্তিত নই। নির্বাচন নিয়ম অনুযায়ী হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য ছবি যুক্ত ভোটার তালিকা, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন করেছেন। নির্বাচন সময়মত হবে, সুষ্ঠু হবে। সরকার অবাধ, স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। নির্বাচনে সব দলই আসলে ভাল। যারা নির্বাচনে অংশ নেবে না, তারা নেবে না। আমরা জনগণের ওপর বিশ্বাসী। জনগণ যাকে চাইবে, তাকে ভোট দেবে। আওয়ামী লীগের সেøাগান রয়েছে ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’, আমরা এতে বিশ্বাস করি। জনগণ না চাইলে আওয়ামী লীগ জোর করে রাজত্ব চাইবে না।’
বিরোধী দলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের বিষয়ে বিদেশিদের আশ্বস্ত করা নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটি আমাদের মাথা ব্যথা নয়। এটি আপনাদের মাথা ব্যথা। বিদেশিদের আশ্বস্ত করার দরকার নেই। আমি আমার কাজ করে গেলে, তারা (বিদেশিরা) বুঝবে। তখন তারা এটি (তথ্য) হালনাগাদ করবে। জনগণ আমার সঙ্গে থাকলে বিদেশি বা বিদেশি নন এমন মানুষের দরকার নেই।’