স্টাফ রিপোর্টার: নির্বাচন কমিশন গঠনে যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে আজ শনিবার থেকে বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে সার্চ কমিটি। সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে দু’দিনের এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ৬০ জন নাগরিককে। বৈঠকে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক সার্চ কমিটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, এই সার্চ কমিটিকে একটি গুরুদায়িত্ব দেয়া হয়েছে সাংবিধানিকভাবে। তাদের দায়িত্ব দেশবাসীকে একটি আস্থাভাজন কমিশন উপহার দেয়া। আমি মনে করি, ১৬ কোটি মানুষের দেশে সৎ, যোগ্য মানুষকে খুঁজে পাওয়া কোনো কঠিন কাজ হবে না। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গত দুই বার আমরা বোকা বনে গেছি। আমাদের ভোটাধিকার হরণ হয়েছে। নির্বাচন হয়েছে নির্বাসন। সরকার তাদের অনুগতদের নিয়োগ দিয়েছে। এবার আশা থাকবে তারা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করুক। সত্যিকারের স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুক। আমি চাইব প্রেসিডেন্টের কাছে নাম পাঠানোর আগে তারা জনসম্মুখে নাম প্রকাশ করবে। যাতে জনগণ তাদের রায় দিতে পারেন। জনশ্রুতিকে গুরুত্ব দেয়া হোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, অতীত বৈঠক নিয়ে হতাশা আছে। যেভাবে নির্বাচন কমিশন আইন হলো তা নিয়ে প্রশ্ন আছে, অনুসন্ধান কমিটি আরও গ্রহণযোগ্য হতে পারতো। বৈঠকে যাব-কি যাব না, তা আমি নিজেই নিশ্চিত হতে পারছি না। তবে আমাকে ও আমার মতো আরও কয়েকজন স্পষ্টভাষী মানুষকে ডাকার জন্য অনুসন্ধানী কমিটিকে অভিনন্দন। এ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার চরম সংকটকালে অনুসন্ধান কমিটি সর্বোত্তম সিদ্ধান্তটি নিতে পারবে এবং এর ফলে বাংলাদেশের মানুষ তার ভোটাধিকার ফিরে পাবে, আগামী নির্বাচন হবে সত্যি সত্যি অবাধ এবং সুষ্ঠু- এই প্রত্যাশা থাকলো। ‘আজকের পত্রিকা’র সম্পাদক ও সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান বলেন, হ্যাঁ, আমি যাবো আলোচনায়। আমি কথা বলবো, আমার মত জানাবো। সার্চ কমিটি নিয়ে কতটুকু আশাবাদী এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা বলা মুশকিল। সার্চ কমিটি তাদের চিন্তা-ভাবনা, কার্য পদ্ধতি দিয়ে কাজ করবে এটাই আমরা আশা করি। কিছু হওয়ার আগেই একটা মন্তব্য করাও হয়তো ঠিক নয়। আমি আশা করি তারা যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করবেন এবং সঠিক লোকজনদের তারা খুঁজে বের করবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, আলোচনার জন্য চিঠি পেয়েছি। আমি আলোচনায় যাচ্ছি। তিনি বলেন, সার্চ কমিটি নিয়ে আশাবাদী হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। এখানে সকলের মতামতের ভিত্তিতে কমিশন গঠন হবে। আমার তাদের সহযোগিতা করবো।
বৈঠকে আমন্ত্রণ পাওয়াদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এবং বাসসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, সাহিত্যিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ ও গণমাধ্যম গবেষক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান, কবি মহাদেব সাহা, প্রজন্ম একাত্তরের সভাপতি আসিফ মুনীর, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন, অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, রাজনীতি বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম আব্দুল আজিজ, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, সাংবাদিক আবেদ খান, মোজাম্মেল বাবু, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং দৈনিক সমকালের প্রকাশক একে আজাদ, দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার আব্দুল মোবারক ও সাখাওয়াত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আইনজীবী এবং সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান প্রমুখ।