স্টাফ রিপোর্টার: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচনকালীন ক্ষমতার কমান্ড থাকবে ইসির হাতে। এ সময় সরকার ইসিকে সহযোগিতা না করলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। নির্বাচনের সময় একটা সরকার ক্ষমতায় থাকবে। সরকার ইসিকে সহযোগিতা করবে। আমরা সরকারের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করতে পারব। গতকাল সোমবার (২৫ জুলাই) সকালে নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সঙ্গে সংলাপে সিইসি এসব কথা বলেন।তিনি আরো বলেন, সত্যি সত্যি আমাদের ওপরে আরোপিত ক্ষমতাটার কমান্ড আমার হাতে; মূল শক্তিটা পুলিশ, বিজিবি ও সেনা বহিনীর হাতে। শক্তিটা আমার হাতে নয়, কমান্ডটা আমার হাতে আছে।
নির্বাচনকালে ইসির অধীনে মন্ত্রণালয় থাকলে নতুন সংকট সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন সিইসি। অন্য কোনো দেশ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের কোনো দলকে সমর্থন কিংবা ধমক দেবে-তেমনটা ‘বিশ্বাস করতে চান না’ তিনি। আর তেমন যদি সত্যি সত্যি ঘটেও, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকেই তা সামাল দেওয়ার পরামর্শ দেন।
দুপুরে নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে সিইসি বলেন, অতীতে নির্বাচন কমিশনের প্রদত্ত ক্ষমতা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়নি। বর্তমান কমিশন আইন-বিধির কঠোর প্রয়োগ করবে। আমরা চেষ্টা করব আমাদের যে আইন-কানুন আছে, সেখানে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দেওয়া আছে। সেই বিধি-বিধানটাই আমরা যাতে সঠিকভাবে করতে পারি। এ সময় দলটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে ১১ দফা প্রস্তাব পেশ করেন।
এর আগে সকালে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), এলডিপি ও ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত সংলাপ ছিল। কিন্তু বাসদ এবং এলডিপি সংলাপ বর্জন করে। সংলাপে অংশ নিয়ে প্রাপ্ত ভোটের হারের ভিত্তিতে জাতীয় সংসদের আসন বণ্টনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। অন্যদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার চায় না বাংলাদেশ মুসলিম লীগ। একই সঙ্গে ‘না’ ভোটের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনারও দাবি জানিয়েছে দলটি। বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা সুজা ও মহাসচিব কাজী আবুল খায়েরের স্বাক্ষরিত প্রস্তাবনায় আইনি কাঠামো, নির্বাচনি প্রক্রিয়া ও বিবিধ বিষয়ে ১৯টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
বিদেশিদের হুমকিধমকি এলে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার কথা বলেন তিনি। সিইসি বলেন, এতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) করার কিছু নেই। দেশের বাইরে থেকে যদি কোনো সমর্থন আসে, সেটা আমরা কিছুই বলতে পারি না। দেশের বাইরে থেকে কোনো হুমকিধমকি আসে কি না, সেটা আপনারা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবেন। সিইসি বলেন, আপনাদের সব সময় আহ্বান জানাব যে নির্বাচনে আসুন। আপনারা না এলে নির্বাচন করব না—এ কথা ইসি কখনোই বলেনি। কিন্তু যেহেতু আমরা গণতন্ত্রে, নির্বাচনে বিশ্বাস করি, এটা বহুদলীয় গণতন্ত্র। যদি দ্বিদলীয় বা তিন দলীয় ব্যবস্থা হতো তাহলে একটা প্রশ্ন থাকত। তিনি আরো বলেন, অনেকে বলেন ইসিকে শক্তিশালী করতে হলে চার-পাঁচটা মন্ত্রণালয় ন্যস্ত করতে হবে। এটা বাস্তবায়ন করলেও যে আমরা নিতে পারব, তা মনে হয় না।