আলমডাঙ্গা ব্যুরো: সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় ৫ হাজার টাকা সরকারি অনুদান নিয়ে আলমডাঙ্গার বিভিন্ন মসজিদ কমিটির সভাপতি ও ঈমাম-মোয়াজ্জিনের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে দ্বন্দ্ব। অনেক সভাপতি সরকারি অনুদানের এ অর্থ নিজের বলে দাবি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনসূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে আর্থিক অনুদান হিসেবে দেশের দুই লাখ ৪৪ হাজার ৪৩টি মসজিদের জন্য ১২২ কোটি দুই লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। প্রতিটি মসজিদ পাঁচ হাজার হারে এ অনুদান পাবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ টাকা বিতরণ করার কথা। বিশ্বব্যাপী বিরাজমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব অনুসরণসহ নানাবিধ কারণে দেশের মসজিদগুলাতে মুসল্লিরা স্বাভাবিকভাবে ইবাদত করতে পারছেন না। এতে দানসহ অন্যান্য সাহায্য কমে যাওয়ায় মসজিদের আয় হ্রাস পেয়েছে। ফলে মসজিদের দৈনন্দিন ব্যয় চালানো কঠিন হয়ে পয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মসজিদসমূহের আর্থিক অসচ্ছলতা দূর করতে প্রত্যেক মসজিদের অনুকূলে পাঁচ হাজার টাকা হারে অনুদান দেয়ার অনুমোদন দিয়েছেন।
আলমডাঙ্গা উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার আকতারুজ্জামান জানান, আলমডাঙ্গা উপজেলার ৪৭৭টি মসজিদ এ অনুদানের অর্থ পাচ্ছে। গতকাল ২৮ মে আলমডাঙ্গার ৮টি ইউনিয়নের সকল মসজিদ কমিটির সভাপতির হাতে অনুদানের টাকা তুলে দেয়া হয়েছে। আলমডাঙ্গা পৌরসভা, জামজামি, বেলগাছি, নাগদাহ, জেহালা, ভাংবাড়িয়া, কুমারী ও খাদিমপুর ইউনিয়নের মসজিদগুলোর সভাপতি এ অনুদানের অর্থ হাতে পেয়েছেন। বাকি ৮টি ইউনিয়নের মসজিদের টাকা ২৯ মে প্রদান করা হবে।
এদিকে, এ অনুদানের টাকা খরচের ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ কমিটির সভাপতি ও ঈমাম-মোয়াজ্জিনের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে দ্বন্দ্ব। গত সন্ধ্যায় অনেক মসজিদ কমিটির সভাপতির সাথে অনেকের তর্কবিতর্কও হয়েছে।
নাম না প্রকাশের জন্য অনুরোধ করে একাধিক মসজিদের ঈমাম জানিয়েছেন, সরকারি অনুদানের অর্থ তাদের মসজিদ কমিটির সভাপতি নিজের বলে দাবি করছেন। অভিযুক্ত ঈমামদের দাবি ওই অর্থ ঈমাম-মোয়াজ্জিনের যদি দিতো তাহলে তাদের হাতেই দিতো। তাছাড়া এ অর্থ দেয়ার সময় তাদেরকে খরচের ব্যাপারে তেমন কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আলমডাঙ্গা ফিল্ড সুপারভাইজার বলেন, গত ২ দিন পূর্বে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ এ অর্থ খরচের ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি মসজিদের ঈমাম-মোয়াজ্জিনকে ওই অর্থ দেয়ার নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এ অর্থ সভাপতিদের হাতে তুলে দেয়ার সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সকলকে তা বলেও দিয়েছেন। এখানে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই।
জোড়গাছা জামে মসজিদের সভাপতি শরিফ আহমেদ বলেন, এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন পড়লেই বোঝা যায় যে, করোনাকালে মসজিদে মানুষ যেতে পারছে না, সে কারণে মসজিদের উপার্জন কমে গেছে। সেই ঘাটতি লাঘব করতেই সরকার এ ৫ হাজার করে টাকা দিচ্ছে। উপার্জন কমে গেলে কী হয়? মসজিদের ঈমাম-মোয়াজ্জিনের বেতন, বিদ্যুতবিল বাকি পড়েছে। এ অর্থ দিয়ে তা পরিশোধ করতে হবে।