স্টাফ রিপোর্টার: নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার, বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি এবং নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল শনিবার সিলেট বিভাগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশস্থল সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠে ইতোমধ্যেই নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সিলেট বিভাগে ধর্মঘট ডেকেছে বিভিন্ন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতি। মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন মালিক সমিতি। এ ছাড়া হবিগঞ্জে আজ শুক্রবার সকাল থেকে জেলা মোটর মালিক গ্রুপের আওতাধীন সব যান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বিএনপির অভিযোগ, মহাসমাবেশে বাধা সৃষ্টি করতেই সরকারি দলের ইন্ধনে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তবে বিএনপি নেতারা মহাসমাবেশ সফল করতে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানিয়েছেন, সব বাধা উপেক্ষা করেই এ গণসমাবেশেও মানুষের ঢল নামবে।
সিলেটে বাস মালিক সমিতির নেতারা দাবি করেছেন পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা এ ধর্মঘট ডেকেছেন। তবে এই ধর্মঘটে গণসমাবেশ দমে যাবেন না বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। সব বাধা উপেক্ষা করে গণসমাবেশ সফল করার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে বিএনপি।
জানা যায়, শুধুমাত্র সিলেট জেলায় ধর্মীয় সংগঠন ‘আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ এর ইজতেমার কারণে কাল ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে। আর মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে দুই দিনের অর্থাৎ আজ ও কাল ধর্মঘট আহ্বান করেছে মালিক সমিতি। তবে শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ ইজতেমার দিন কোনো ধর্মঘট পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম জানান, ধর্মঘটের সাথে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই। সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মঈনুল ইসলাম জানান, কোনো রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশে বাধা সৃষ্টি করার বিপক্ষে তারা।
পরিবহন মালিকদের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির সমাবেশের দুইদিন আগ থেকে ধর্মঘট ডাকার জন্য মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের ওপর চাপ ছিল। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও সিলেটের নেতাদের ঢাকায় ডেকে নিয়ে তিন দিনের ধর্মঘট ডাকার অনুরোধ করেন। তবে সিলেটের মালিক ও শ্রমিক নেতারা ধর্মঘটের পক্ষে ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত সব পক্ষকে সন্তুষ্ট রাখতে মালিকপক্ষ কেবল সমাবেশের দিন ধর্মঘট ডেকেছে বলে জানিয়েছে এই সূত্র।
আজ ও কাল মৌলভীবাজারে ডাকা হয়েছে দুইদিনের পরিবহন ধর্মঘট। জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির এ ধর্মঘটে বন্ধ থাকবে সব ধরনের যানবাহন। বুধবার রাতে এই ঘোষণা দেন মৌলভীবাজার বাস মিনিবাস মালিক সমিতির চেয়ারম্যান রশিদ উদ্দিন আহমদ। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সুনামগঞ্জ-সিলেট রুটে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সুনামগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, আজ ও কাল সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। অপর দিকে হবিগঞ্জে আজ সকাল থেকে জেলা মোটর মালিক গ্রুপের আওতাধীন সব বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই সরকার চাপ দিয়ে ধর্মঘট আহ্বান করিয়েছে। তবে কোনো ষড়যন্ত্রই গণজমায়েতকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ বলেন, কালকের সমাবেশকে ঘিরে সিলেটে যেন অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে পুলিশ বরাবরের মতোই পদক্ষেপ নিবে।