স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বাংলাদেশ এখন যে ষড়যন্ত্রের জালের মধ্যে আটকে গেছে, সেই জাল ছিঁড়ে ফেলতে হলে জনগণের সরকার, নির্বাচিত সরকার খুবই দরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী চালক দলের উদ্যোগে আয়োজিত নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য অবিলম্বে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার দাবিতে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, বাংলাদেশ হাসিনামুক্ত হওয়ার পর মানুষের যে প্রত্যাশা ছিল- নির্বিঘেœ মানুষ বসবাস করবে। লুটেরাদের হাত থেকে দেশ রক্ষা পাবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। প্রশাসন মানুষকে সহায়তা করবে। কিন্তু, গত ৬ মাসে বাংলাদেশ যেভাবে চলেছে, যেভাবে এগোচ্ছে, ক্রমেই পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী বাংলাদেশ চলছে না।
তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থায় যে সিন্ডিকেট শেখ হাসিনার সময় নিয়ন্ত্রণ করতো, প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম যেভাবে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছিল, এখনও দ্রব্য-মূল্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় এই অন্তর্বর্তী সরকারকে বলবো, দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করুন। যাতে করে সীমিত আয়ের মানুষ জীবন-যাপন করতে পারে সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের উদ্দেশ্যে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ড. ইউনূস সাহেব আপনি মানুষের উপকার করার জন্য দেশে এবং সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়েছেন। আপনার সুনাম আছে। যারা খুব নিপীড়িত মানুষ, অভাবী মানুষ, আপনি তাদের জন্য গ্রামীণ ব্যাংক বানিয়েছেন। এখন ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়ে আছেন। আপনার কাছে বা আপনার সরকারের কাছে দাবি জানানোর কোনো কারণ নেই। কারণ, আপনি নিজের থেকে যদি পদক্ষেপ নিতে না পারেন, তাহলে সেটা দেশ এবং মানুষের জন্য দুঃখজনক ঘটনা হবে।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমি মনে করি, যত দ্রুত সম্ভব ভালো নির্বাচন করার জন্যে যে সংস্কারগুলো অতি প্রয়োজনীয়, সেই সংস্কারগুলো সম্পন্ন করেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান প্রকাশ্যে বলেছেন- নির্বাচন এবং সংস্কারের ভেতরে কোনো সংঘাত নেই। কিন্তু, সরকারের পক্ষ থেকে একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা হয়েছে যে, কোন সংস্কার করলে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া যাবে। আর বেশি সংস্কার করলে একটু দেরি হবে। কম বেশির ব্যাপার না। সংস্কার কি করবেন সেটাই-তো এখনো স্পষ্ট করেননি। সংস্কার চলমান একটি প্রক্রিয়া। যতদিন পৃথিবী থাকবে, দেশ থাকবে, ততদিন চলতে থাকবে।
তিনি বলেন, সংস্কারের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধ নেই। সরকারের সঙ্গেও রাজনৈতিক দলের বিরোধ নেই। এমন একটা চমৎকার পরিস্থিতিতে আমরা কেন দেশকে ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারব না, এটি হচ্ছে মুখ্য বিষয়। বাংলাদেশের আশেপাশে অনেক শক্তি আছে, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করেছে। যারা বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে, তারা এখনো সক্রিয়। তারা এখনো খুনের জন্য আফসোস করে না এবং লুটপাটের জন্য লজ্জাবোধ করে না। খুন এবং লুটপাটের জন্য যারা কুণ্ঠিত না, লজ্জিত না, তাদেরকে এখনো রক্ষা করতে হবে এটারতো কোনো অর্থ নেই।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন কবিরের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক জুয়েল খন্দকারের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন— বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, তাঁতি দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কর্মজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন প্রমুখ।