রাঙামাটির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত : পাহাড় ধসের শঙ্কা

 

স্টাফ রিপোর্টার: টানা প্রবল বর্ষণে বাঘাইছড়ি, বরকলসহ রাঙামাটির বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ভারতের মিজোরাম থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী উপজেলা বাঘাইছড়ি এবং বরকলের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া কাপ্তাই হৃদ সংলগ্ন বিভিন্ন উপজেলার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্গতিতে প্লাবিত এলাকার মানুষ। বাঘাইছড়িতে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিচ্ছেন দুর্গত লোকজন। এদিকে পাহাড় ধসের শঙ্কায় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিতে থাকা শহর এলাকার মানুষজন। তাদের মাঝে খাবারসহ ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে জেলা প্রশাসন।

বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন জানায়, অব্যাহত ভারি বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বেশ কয়েকটি নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কাচালং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট বাজারের আশপাশের এলাকা, বাঘাইছড়ি পৌরসভা ও আমতলী ইউনিয়নের প্রায় ১০টি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। মাছের ঘের ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া টানা বর্ষণে মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়কসহ পাহাড়ি এলাকায় মাটি ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড়ে ঝুঁকিতে বসবাসকারী লোকজনকে সতর্ক করে মাইকিংয়ে প্রচারে নিরাপদ স্থানে বা আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যেতে বলা হচ্ছে। উপজেলায় ১৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সতর্কতার সঙ্গে প্রস্তুত রয়েছি। উপজেলার সবকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার্তদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে ইতিমধ্যে বাঘাইছড়ি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মাস্টারপাড়া, পুরান মারিশ্যা, মধ্যমপাড়ার লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন। তাদের পালিত গবাদিপশু পাশের উঁচু এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অবিরাম বৃষ্টিতে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে সীমান্তবর্তী অন্য উপজেলা বরকলের ভুষণছড়া, ছোটহরিণাসহ আশপাশে নিম্নাঞ্চল উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া উজানের পানিতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, রাঙামাটি সদর, নানিয়ারচর, লংগদুসহ বিভিন্ন উপজেলার নিচু এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এদিকে টানা বর্ষণে রাঙামাটি সদরে পাহাড়ের পাদদেশে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবারত লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে সতর্ক বার্তা জারি করে তা মাইকিংয়ে প্রচার করছে জেলা প্রশাসন। শহরে ২০টি আশ্রয় কেন্দ্রে খুলে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন ঝুঁকিতে বসবাসকারী লোকজন।

গত চার দিন ধরে রাঙামাটিতে টানা বর্ষণ হচ্ছে। শনিবারও অবিরাম বৃষ্টিপাত হয়েছে। শহরের রিজার্ভবাজার এলাকার প্রধান সড়ক, পাবলিক হেলথ এলাকা, তবলছড়ি, রূপনগর, ভেদভেদিসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

Comments (0)
Add Comment