মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার জেলাবাসীর কোনো কাজে লাগছে না। পুকুর, লোকবল, পোনা উৎপাদনের সব সরঞ্জাম থাকলেও অজ্ঞাত কারণে মাছের রেণু ও পোনা উৎপাদন বন্ধ প্রায় তিন বছর। মাছের বদলে খামারে বেশির ভাগ জায়গাজুড়ে চাষ হচ্ছে ঘাস। রেণু ও পোনা উৎপাদনের জন্য সরকারি লক্ষ্যমাত্রা ঘাস চাষ করে পূরণের কথাও স্বীকার করেছেন এই খামারের দায়িত্বরত কর্মকর্তা।
জেলার শহরের উপকণ্ঠে জেলা মৎস্য অফিসসংলগ্ন ১০ একর জমির ওপর ৮টি পুকুর নিয়ে গড়ে ওঠা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারটিতে দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে পোনা উৎপাদন। পানিতে অতিরিক্ত আইরন থাকার কারণ দেখিয়ে খামারটিতে রেণু ও পোনা উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। রেণু ও পোনা উৎপাদনের জন্য প্রতি বছর বরাদ্দ ২ লাখ ২৯ হাজার টাকা। আর এখান থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। সরকারি এ লক্ষ্যমাত্রার বরাদ্দের অতিরিক্ত ৬৯ হাজার টাকা পূরণের জন্য খামারে ঘাষ চাষ, গাছ বিক্রি, খামারের ঘর পার্শ^বর্তী এলাকাবাসীকে গরু, ছাগল রাখার জন্য ভাড়া দেয়ার অভিযোগ উঠেছে খামার ব্যবস্থাপক ইকবাল শরীফের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন অযতœ আর অবহেলায় পড়ে থাকা খামারের আবাসিক ভবনসহ বিভিন্ন উপকরণ ও মেশিনগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। পুকুরের পাড়গুলোও ভেঙে গেছে।
স্থানীয় বসিন্দা বাবুল আক্তার বলেন, খামারটি আগে উন্মুক্ত থাকত। আশপাশের বয়স্ক লোক বিকেলে হাঁটাচলাসহ শারীরিক কসরত করতেন। এখন খামারটি ২৪ ঘণ্টা তালাবন্ধ থাকে। ভেতরে ঢুকতে হলে অফিসে ফোন করলে অফিসের লোক এসে গেট খুলে দেন। একটি সরকারি অফিস ২৪ ঘণ্টা তালাবন্ধ নিয়ে আমাদের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
খামার অপারেটর সাফিরুল ইসলাম বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে ভবনগুলো। আমি নিজ দায়িত্বে একটি ঘর মেরামত করে থাকতাম। আমাকে ঘর থেকে নামিয়ে দিয়ে গরু রাখার জন্য সেটি বহিরাগত একজনকে ভাড়া দেয়া হয়েছে।
খামার ব্যবস্থাপক ইকবাল শরীফ বলেন, সরকারের একটি লক্ষ্যমাত্রা থাকে কিন্তু এখানে রেণু পোনা উৎপাদন করা সম্ভব হয় না। তাই জমি লিজ ও ঘাষ চাষ করে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হয়। আমার এখানে লোকবল কম গরু ছাগল ঢুকে ঘাস ও গাছ খেয়ে ফেলার কারণে খামার ২৪ ঘণ্টা তালাবন্ধ রাখা হয়। এখানে স্থানীয়ভাবে একজন নাইট গার্ড থাকে তার কোনো বেতন নেই। তাই খামার অপারেটর সাকিরুল ইসলামের ঘরটিতে এ নাইট গার্ডকে গরু পোষার জন্য দেয়া হয়েছে।