স্টাফ রিপোর্টার: চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) প্রায় চার লাখ টন অপরিশোধিত সয়াবিন বা ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে। ফেব্রুয়ারি-মার্চেও প্রচুর ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে। সর্বশেষ গত সপ্তাহে তিনটি জাহাজে ৩৬ হাজার টন সয়াবিন আসে, যা খালাস পর্যায়ে রয়েছে। আমদানি ও সরবরাহে কোনো ধরনের সংকট না থাকলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম এখন আকাশচুম্বী। দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নাভিশ্বাস উঠেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের বাজারেও সয়াবিনের দাম বেড়েছে-এমন অজুহাত আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা দেখালেও সাধারণ ক্রেতা-ভোক্তারা বলছেন, দাম বেড়েছে এক-দেড় মাস আগে ধাপে ধাপে। কিন্তু ৫-৬ মাস আগে যে বিপুল পরিমাণ তেল আমদানি হয়েছে সেগুলো গেল কোথায়! তাদের অভিযোগ, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে স¤প্রতি সরবরাহ কমিয়ে দেয়। গড়ে তোলে মজুত। এতে সৃষ্টি হয় কৃত্রিম সংকট। এই সংকট পুঁজি করে পাইকারি থেকে খুচরা বাজার-সব পর্যায়ে সয়াবিন তেলের জন্য এক ধরনের হাহাকার তৈরি হয়েছে। হু হু করে বাড়ছে দাম। কোনো ধরনের অভিযান, প্রশাসনের তদরাকি কাজে আসছে না।
এদিকে দেশে সয়াবিনের সংকট নেই বলে আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাবি করলেও ডিলার পর্যায় থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত তেল পাচ্ছেন না। তেলের সরবরাহ কম বলে বিভিন্ন ডিলার খুচরা বিক্রেতাদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন বা চাহিদার চেয়ে কম দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, অনেক স্থানে খুচরা পর্যায়ে দোকানদাররা খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন না। তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তেল গুদামজাত করে রেখেছেন বলে অভিযোগ আছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে বিক্রিও করতে হচ্ছে আগের চেয়ে উচ্চম‚ল্যে। কৃত্রিম সংকটের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তারা এজন্য উল্টো বাজার তদারকিতে নিয়োজিত সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের তৎপরতাকেই দুষছেন। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দেশে সয়াবিন তেলের পর্যাপ্ত মজুত আছে। কোথাও সংকট নেই। কিন্তু খুচরা বাজারে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের তৎপরতা শুরুর পর অনেক ব্যবসায়ী জরিমানার ভয়ে তেল বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।