ভোটের দিন সকালে ব্যালট পাঠানো হতে পারে

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদনির্বাচন প্রসঙ্গে ইসি আলমগীর

কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা নেই

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট ভোটের দিন সকালে পাঠানোর চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। কাগজের ব্যালটের নির্বাচনে যাতে কোনো রকম অপব্যবহার না হয়, সেজন্য ইসি এই কৌশল অবলম্বন করতে পারে বলে জানান তিনি। গতকাল রোববার নির্বাচন ভবনে কয়েকটি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মো. আলমগীর এসব কথা বলেন। তিনি আরও জানান, আগামী সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা নেই ইসির। প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদের শূন্য হওয়া আসনের বেশির ভাগ উপনির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করে আসছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ইভিএম নিয়ে বিভিন্ন মহলের বিতর্ক, মেশিনের আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে যাওয়া এবং মেরামতে কাক্সিক্ষত টাকা না পেয়ে আগামী নির্বাচনে কাগজের ব্যালটে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। কাগজের ব্যালটে ভোটগ্রহণে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেন, ব্যালটের নির্বাচনে যাতে কোনো রকম অপব্যবহার হতে না পারে, সেজন্য আমাদের কিছু কৌশল আছে, সেগুলো আমরা প্রয়োগ করার চেষ্টা করব। এর মধ্যে একটি হচ্ছে-ভোটকেন্দ্রে আসা-যাওয়ার যোগাযোগ ভালো থাকলে নির্বাচনের দিন সকালে ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠাই আর যেসব কেন্দ্রে যাতায়াতব্যবস্থা উন্নত নয়, সেখানে আগের রাতে পাঠাই। তিনি বলেন, কাগজের ব্যালটে যত নির্বাচন করেছি, এভাবেই সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। আমরা জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এই ধরনের সিদ্ধান্ত হয়তো নিতে পারি। যেগুলোয় সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো সম্ভব, সেগুলোকে চিহ্নিত করে সকালে পাঠাব আর যেখানে সকালে পাঠানো সম্ভব নয়, সেখানে বিশেষ ব্যবস্থায় রাতে পাঠাব, যেন পথে কোনো রকম মিসইউজ বা ছিনতাই না হতে পারে। নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশ নিলে নির্বাচন ভালো হয় জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, সব রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, সেখানে এমনিতেই একটা ভারসাম্য থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়েও তারাই (রাজনৈতিক দলগুলো) শৃঙ্খলা রক্ষার একটি ভূমিকা নেয়। কারণ, তারা জানেন, নির্বাচনে যদি কোনো পরিস্থিতির অবনতি হয় বা ভুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়ে ইসির ওপর কোনো চাপ আছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, এ বিষয়ে কোনো চাপ নেই। থাকবে কেন? আমরা প্রথম থেকেই বলছি যত খুশি বিদেশি পর্যবেক্ষক আসতে পারেন। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো লিমিটেশন নেই। বিদেশি পর্যবেক্ষক আসার প্রক্রিয়া সরকারের ওপর নির্ভরশীল জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো বিদেশি পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে চেয়ে আবেদন করলে সেটা পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিই। তারা সেটা পর্যালোচনা করে দেখেন যে আবেদনকারীরা আসলেই পর্যবেক্ষক কি না, অতীতে পর্যবেক্ষণে সম্পৃক্ত ছিল কি না। অনেক সময় তারা (পর্যবেক্ষকের জন্য আবেদনকারী) মানব পাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন অথবা অন্য অন্যায় কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন, সেগুলো স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখে থাকে। এরপর ভিসা দেয়া হলে আমাদের তরফ থেকে কোনো আপত্তি থাকে না। আগামী নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা আছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে ফরমাল আলোচনা হয়নি, চিন্তাভাবনাও নেই। জাতীয় নির্বাচনে হয়তো অনেক কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ থাকবে। এত কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে তা দেখা কঠিন। আমরা সেক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থা হিসাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশি সদস্য নিয়োগ করবো।

Comments (0)
Add Comment