স্টাফ রিপোর্টার: যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে কাকে আমন্ত্রণ দিলো বা না দিল সেটা শেখ হাসিনার সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। এ দেশের গণতন্ত্র ঠিক আছে কি না, সেটা হচ্ছে বর্তমান সরকারের ভাবনা ও ভূমিকা।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ দেশে বিদেশীদের সফর প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, একের পর এক বিদেশি কূটনীতিক বাংলাদেশ সফরে এসেছেন এটা ইতিবাচক। বিদেশি কূটনীতিকরা সরকারের সাথে মতবিনিময় করেছেন, কিন্তু বিএনপির সাথে কোনো বৈঠক করেননি। কূটনীতিকরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে ইতিবাচক বৈঠক করেছে। তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। সরকারের সাথে কথাবার্তা বলেছেন।
আমেরিকার দূতের সাথে কথা বলতে বিএনপি অনেক চেষ্টা করেছিল, সফল হয়নি। বিএনপি ক্রমেই বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে। নষ্ট রাজনীতির হোতা হচ্ছে বিএনপি। এদের কাছে গণতন্ত্র, জনগণ কেউই নিরাপদ নয়।
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার জন্য হাজার তদবির করেও বিএনপি ব্যর্থ হচ্ছে এমনটি দাবি করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিদেশিদের সাথে লবিং করেও ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। এখন ঘরে বসে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখা, আর জানালা দিয়ে পুলিশের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় নেই। এ সময় তিনি বর্তমান সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কর্মকা-ে দেশের মানুষ খুশি বলে উল্লেখ করেন। মন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী চলা সঙ্কটেও দেশের মানুষ শেখ হাসিনার ওপর খুশি। জনগণ শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করে, শেখ হাসিনার সততায় তারা খুশি। শেখ হাসিনার উন্নয়নে খুশি, কিন্তু মন খারাপ শুধু বিএনপির। উন্নয়ন দেখলে তাদের ভালো লাগে না, অন্তর জ্বালায় ভোগে।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৪ বছর আগের ও পরের মোহাম্মদপুর, দিন রাতের পার্থক্য। মোহাম্মদপুর এখন আলোয় আলোকিত। এটা এখন ডিজিটাল নগরী। এই নগরী এখন উন্নয়নের ঝলকে আলোকোজ্জ্বল। মোহাম্মদপুর, আদাবরের যে দিকেই তাকাবেন উন্নয়ন, শুধু উন্নয়ন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই এত উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠিয়েছেন। তার মাধ্যমে আমাদের ছেলেমেয়েরা এখন বিদেশি চ্যানেলে দেখতে পায়। তিনি মাতারবাড়িতে, পায়রায় গভীর সমুদ্রবন্দর বানিয়েছেন, শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিতের লক্ষ্যে রূপপুর, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বানিয়েছেন। শেখ হাসিনাই একদিনে ১০০ সেতু, ১০০ রাস্তা উদ্বোধন করেছেন। সঙ্কটের সময়েও অতিরিক্ত টাকা দিয়ে জ্বালানি, খাদ্যশস্য কিনছেন। কিন্তু দিচ্ছেন কম দামে। আর বিএনপি বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানাতে চায়। মেয়েদের দমিয়ে রাখতে চায়। অথচ শেখ হাসিনা নারীদের অধিকার নিশ্চিত করেছেন।
আওয়ামী লীগ নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে-বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ পালিয়ে যাবে না, পালিয়ে যায় তারেক রহমান। আওয়ামী লীগের শেকড় এ দেশের মানুষের অন্তরে অন্তরে। আওয়ামী লীগ আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। পালিয়েছেন আপনারা, ভবিষ্যতেও পালাবেন আপনারা। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বেশি দামে জ্বালানি কিনে ভর্তুকি দিয়ে দেশ চালাচ্ছেন আর লুটপাটের রাজা তারেক, হাওয়া ভবনকে খাওয়া ভবন বানিয়েছে। অপর দিকে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে-মেয়েরা চাকরি করে খায়, তারা ব্যবসা করে না, সাধারণ জীবনযাপন করে। নিজের ভাগ্য নয়, সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছে শেখ হাসিনার সরকার।
বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন বিএনপির মুখে আবার খই ফুটেছে। তাদের আন্দোলনের নদীতে এখন আর জোয়ার নেই, গণজোয়ারও আসে না। এ বছর না আগামী বছর, কোন বছর আন্দোলন হবে জানা নেই। তাদের সব কিছুই ভুয়া। বিএনপি সেøা-মোশনে পদযাত্রা করছে, শর্টমার্চ থেকে লংমার্চে যাচ্ছে; সবই ভুয়া। তাদের আন্দোলনের খেলা শেষ। পদযাত্রার নামে যতই অপচেষ্টা করুক না কেন, নির্বাচন ছাড়া আর বিকল্প কোনো উপায় নেই।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, ঢাকা-১৩ আসনের এমপি সাদেক খান প্রমুখ।