বিএনপির পতনযাত্রা শুরু হয়েছে: কাদের

 

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে ঘোড়ার ডিম ও হাঁসের ডিম দিয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে’ আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রাপূর্ব বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল আজ কী বলেছেন? তাদের পদযাত্রা নাকি গণযাত্রা, বিজয়যাত্রা। আসলে বিএনপির পদযাত্রা পরাজয়ের যাত্রা, এই পদযাত্রায় তাদের পতনযাত্রা শুরু হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছে? শেখ হাসিনার পদত্যাগ বা সরকারের পদত্যাগ দিয়েছে? বিএনপি কী পেয়েছে? তারা পেয়েছে হাঁসের ডিম আর ঘোড়ার ডিম। যুক্তরাষ্ট্রও এসেছে। কিন্তু তারাও বিএনপিকে দিয়ে গেল ঘোড়ার ডিম। তত্ত্বাবধায়ক হবে না। সংসদের বিলুপ্তি হবে না। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। বিএনপি যতই মারামারি, পালটাপালটি হুমকি দিক না কেন আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান থেকে এক চুলও নড়বে না।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এ শোভাযাত্রার আয়োজন করে। লাখো মানুষের সমাগম ঘটিয়ে শোভাযাত্রাটি রীতিমতো জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি যতই বিষোদগার আর মিথ্যাচার করুক না কেন—কোনো লাভ হবে না। আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলেছি, আমরা নির্বাচনের আগে ও পরে শান্তি চাই। তত্ত্বাবধায়ক হবে না। তারা (বিএনপি) মনে করেছিল ২০০১ সালের মতো জিতে যাবে। সে আশায় গুড়েবালি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মেরে ফেলেছি। আমরা করিনি। তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করেছে উচ্চ আদালত। বিএনপি আদালত মানে না। বিচার পক্ষে না গেলে তা মানে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে বলে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এর বাইরে এক চুলও আমরা নড়ব না। যতই মারামারি, হুমকিধমকি দেওয়া হোক না কেন-আওয়ামী লীগ কারো কাছে মাথা নত করে না। তিনি বলেন, বিএনপি মার্কা তত্ত্বাবধায়ক আমরা চাই না। বিএনপি মার্কা নির্বাচনকালীন সরকার আমরা মানি না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির দুর্নীতি, লুটপাট, চুরি, হত্যার বিরুদ্ধে খেলা হবে। বাংলাদেশে শয়তানের দলের আসল ঠিকানা বিএনপি। তাদের দফা নাকি একটা, আবার বলে ৩২টা। তাদের দফার ঠিক নেই, ঐক্যের ঠিক নেই। তারা বিদ্যুতের নামে খাম্বা দিয়েছে। এই সরকারের আমলে দেশের মানুষ শতভাগ বিদ্যুত পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছু সুন্দরভাবে সামাল দিচ্ছেন। কিন্তু বিএনপি ঘোড়ার ডিম ছাড়া কিছুই দিতে পারবে না। এই সরকার পদ্মা সেতু দিয়েছে, মেট্রোরেল দিয়েছে, এক দিনে ১০০ সেতু উদ্বোধন করেছে। সামনের মাসে আরো কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন হবে। অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু টানেল প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। এ সময় প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ফখরুল, আপনি কী দেখিয়ে নির্বাচন করবেন? আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। এ সন্ত্রাসী দল আজকে সকালে আমাদের মিরপুরে ছাত্রলীগের কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। ইতিমধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকা- শুরু করেছে। আমরা রাজপথে মোকাবেলা করব। বিএনপিকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, যদি অবাধ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করেন, আওয়ামী লীগের কর্মীদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করেন তাহলে আপনাদের পরিণাম হবে ভয়াবহ। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। পদযাত্রার নামে মিরপুরে যেভাবে ছাত্রদের ওপর হামলা করেছে, তারা বাংলাদেশকে আবার সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করতে চায়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আবু আহমেদ মন্নাফী এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. হুমায়ুন কবির। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এ সমাবেশের আয়োজন করেছে। সমাবেশ শেষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট থেকে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, মিরপুর রোড হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে শেষ হয়। এতে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা খ- খ- মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণ করে। তাদের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন শোভা পায়। শোভাযাত্রায় বিপুল মানুষের উপস্থিতিতে শাহবাগ, রমনা, জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আশপাশের এলাকায় দেখা দেয় তীব্র যানজট। শোভাযাত্রার আগেই বড় সমাবেশে রূপ নেয় রমনা এলাকা। শোভাযাত্রা সফল করতে নেতাকর্মীরা বাদ্যবাজনা ও ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে জড়ো হন রমনা এলাকায়।

Comments (0)
Add Comment