স্টাফ রিপোর্টার: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে শান্তি পুরস্কার প্রবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জুলিও কুরি শান্তি পদক পেয়েছেন। আজীবন তিনি শান্তির বাণী শুনিয়ে গেছেন। একটি প্রস্তাব এসেছে যে, বাংলাদেশ থেকে শান্তি পুরস্কার দেয়ার। যারা সারা বিশ্বে ও দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবেন, তাদেরকে আমরা সম্মানিত করবো। আমরা ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শান্তি পুরস্কার’ দেবো। আমরা শান্তি চাই, শান্তির পথেই এগিয়ে যাবো। রোববার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি শান্তি পদকপ্রাপ্তির ৫০ বছরপূর্তি’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি এ পুরস্কার প্রবর্তনের ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পুরস্কার (জুলিও কুরি শান্তি পদক) পেয়েছেন, শান্তির বাণী শুনিয়েছেন। কিন্তু তাকে জীবনটা দিতে হয়েছে। আমরা আর অশান্তি চাই না, সংঘাতও চাই না। শান্তি চাই, মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতি চাই।’ এদিকে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থানে র্যালি, আলোচনাসভা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কত্বের প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি পদক প্রদান করা হয়। পদক প্রদানের বিবেচনায় বিশ্বশান্তি পরিষদ ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর পদকপ্রাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণা করে। আর পরের বছর ২৩ মে এশীয় শান্তি সম্মেলনের এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে সেই পদক বঙ্গবন্ধুকে পরিয়ে দেন পরিষদের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল রমেশচঁন্দ্র। সেই অনুষ্ঠানে রমেশচঁন্দ্র বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার নন, তিনি বিশ্বের এবং তিনি বিশ্ববন্ধু।’ স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রনেতার সেটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক পদক লাভ।
চুুয়াডাঙ্গায় জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে র্যালি, আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় একই স্থানে এশে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মনজু, পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ উপলক্ষে আলোচনাসভার প্রধান আলোচক ছিলেন চুুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. আব্দুর রশিদ, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মালিকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তি। আলোচনা সভা শেষে চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম। এছাড়াও এ উপলক্ষে সন্ধ্যা ৭ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মঞ্চে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগরে এ উপলক্ষে গতকাল রোববার সকালে বর্ণাঢ্য র্যালি, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনাসভা ও বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালি শেষে উপজেলা পরিষদের হলরুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (চ.দা.) তিথি মিত্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েসা সুলতানা লাকি, ওসি নাসির উদ্দিন মৃধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান প্রমুখ।
দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছে, দামুড়হুদায় এ উপলক্ষে র্যালি র্যালি আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিত্রাঙ্কন, কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতার নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে র্যালি বের হয়ে উপজেলা চৌরাস্তার মোড় ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতার সভাপতিত্বে আলেচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস, উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী, দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, দামুড়হুদা ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল কামাল উদ্দীন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মতিন, দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মাকসুদুর রহমান রতন, সমবায় অফিসার হারুন অর রশিদ, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হুসনে জাহানসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ। আলোচনা সভা শেষে একই স্থানে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সমস্ত অনুষ্ঠান শেষে চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এর আগে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে র্যালি ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোবাবর সকালে একটি র্যালি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেহেরপুর জেলা পুলিশ সুপার রাফিউল আলম ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম। এসময় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুরের গাংনীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে একটি ফলজ গাছের চারা রোপণ শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকন। বিশেষ অতিথি ছিলেন গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক, গাংনী পৌর মেয়র আহমেদ আলী, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন। এসময় বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে আলোচনা করেন অতিথিবৃন্দ।