স্টাফ রিপোর্টার: বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ওপর পালটা শুল্ক আরোপের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সে সিদ্ধান্ত ৩ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছেন তিনি। তবে চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে বাড়তি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে করা এক পোস্টে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে ট্রাম্প নমনীয় হলেও চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক ১০৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বুধবার ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ৯০ দিনের জন্য পালটা শুল্ক স্থগিত করেছি। এই সময়ে ১০ শতাংশ পালটা শুল্ক কার্যকর থাকবে। তিনি আরও লিখেছেন, বিশ্ববাজারের প্রতি চীনের যে অসম্মান, তার ভিত্তিতে আমি ঘোষণা করছি যে, চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক এখন থেকে ১২৫ শতাংশ হবে, যা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে। আশা করি খুব শিগগিরই, চীন বুঝবে যে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশকে ঠকিয়ে চলা আর টেকসই নয় এবং একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ট্রাম্প অসাধারণ সাহস দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বের সমস্ত দেশকে জানিয়েছিলাম—পালটা ব্যবস্থা না নিলে তোমরা পুরস্কৃত হবে। সুতরাং, যারা আলোচনায় আসতে চায়, আমরা তাদের কথা শুনতে প্রস্তুত। বেসেন্ট বলেন, এই পদক্ষেপ ইঙ্গিত দেয় যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাণিজ্যকে গুরুত্ব দেন এবং আমরা সৎভাবে আলোচনা করতে চাই। বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক জানান, ট্রাম্প যখন ট্রুথ সোশ্যাল-এ এই বার্তাটি লিখছিলেন, তখন তিনি এবং বেসেন্ট তার সঙ্গে ছিলেন। লুটনিক বলেন, স্কট বেসেন্ট এবং আমি প্রেসিডেন্টের পাশে বসে ছিলাম, যখন তিনি তার প্রেসিডেন্সির সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ট্রুথ পোস্টটি লেখেন। বিশ্ব এখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত, কিন্তু চীন ঠিক উল্টো পথে হাঁটছে। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর মার্কিন শেয়ারবাজারে রীতিমতো উল্লাস দেখা যায় বলে জানিয়েছে সিএনএন। ডাউ সূচক এক লাফে ২,২০০ পয়েন্ট বা ৫.৯% বেড়ে গেছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৬.৫% এবং নাসডাক সূচক ৮% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। গত সপ্তাহে ট্রাম্প যে উচ্চ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন, তা বাজারে ধস নামিয়েছিল। উল্লেখ্য, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের পালটা শুল্প আরোপের এই ক্যাম্পেইনে নিশানায় ছিল বাংলাদেশও। ট্রাম্প বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই ঘোষণার পরপরই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এক চিঠিতে তিন মাসের জন্য এই বাড়তি শুল্প আরোপের সিদ্ধান্ত স্থগিতের অনুরোধ করেছিলেন ট্রাম্পকে। শেষ পর্যন্ত সে পথেই হেঁটেছেন ট্রাম্প।