স্টাফ রিপোর্টার: চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামী ৩০ এপ্রিল শুরু হবে। পরীক্ষা সুষ্ঠু ও নকলমুক্তভাবে অনুষ্ঠানের জন্য আগামী ২৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত দেশের সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ঠেকাতে গুচ্ছ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সঙ্গে বিটিআরসি’র যোগাযোগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসের গুজব সৃষ্টিকারীদের পেজ দ্রম্নত বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিটিআরসি প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রাখবে।
এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কেন্দ্রসচিব ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিবের মোবাইলটিও ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন হবে। ট্রেজারি-থানা থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহণ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরা কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না এবং প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাঁচযুক্ত মাইক্রোবাস বা এমন কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস চক্রের কর্মকান্ড নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসন কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যদি কোনো মোবাইল নম্বরে একাধিকবার একই অঙ্কের টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট এজেন্টকে নিকটস্থ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, আগামী ৩০ এপ্রিল শুরু হচ্ছে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১০টায় এবং শেষ হবে দুপুর ১টায়। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী দেরিতে কেন্দ্রে উপস্থিত হলে, তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে ওইদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।
ডা. দীপু মনি বলেন, ২৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মে দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। এছাড়া নজরদারিতে থাকবে মোবাইল লেনদেনও।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালের এসএসসিও সমমান পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ২১ হাজার ১৯৭ এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ জন।
৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ২৭৫ জন। এর মধে ছাত্র ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭০ জন এবং ছাত্রী ৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪০৫ জন।
মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৫ হাজার ১২১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৩ জন এবং ছাত্র ১ লাখ ৫১ হাজার ১২৮ জন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে পরীক্ষার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ হাজার ২৯৫ জন। এর মধ্যে ছাত্রী বেড়েছে ৩৮ হাজার ৬০৯ জন। এ ছাড়া মোট প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২০৭টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন ট্যাগ অফিসার নিয়োগ প্রদান করা হবে। ট্যাগ অফিসার ট্রেজারি, থানা হেফাজত থেকে কেন্দ্র সচিবসহ প্রশ্নপত্র বের করে পুলিশ প্রহরায় সব সেটের প্রশ্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৫ মিনিট পূর্বে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী কোন সচিব, ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট বিধি অনুযায়ী খুলবেন।