স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির সাতজন পদত্যাগ করলে জাতীয় সংসদ অচল হয়ে পড়বে, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এ ভুলের জন্য বিএনপিকে অনুতাপ করতে হবে। সাত বছর পর মানিকগঞ্জে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি গতকাল রোববার বিকেলে এসব কথা বলেন। বিএনপির ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশের কথা উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছিলো। দেশে অরাজকতার সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু সফল হয়নি। আগামী বছর জানুয়ারিতে ফাইনাল খেলা হবে। খেলা হবে দুর্নীতি, লুটপাট আর মানবতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে। সেই খেলায় মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বিজয়ী হবে। আমাদের রিজার্ভ কমে গিয়েছিলো। এখন আবার রিজার্ভের গতি ফিরে এসেছে। ৫ মাসের আমদানি করার মতো রিজার্ভ এখনো আমাদের আছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিএনপির নেতারা নোংরা কথা বলেন। আমরা তা দেখে রাখছি। এর জবাব সময়মতো দেয়া হবে। আওয়ামী লীগের শেকড় অনেক গভীরে। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া সম্ভব নয়। এ সময় দলের নেতাকর্মীদের সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, যারা বসন্তের কোকিল, তারা সাবধান হয়ে যান। আওয়ামী লীগের পদ নিয়ে যারা বাণিজ্য করার চেষ্টা করছেন, তারাও সাবধান হয়ে যান। কিছু বিদেশি দূতাবাসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন হন। ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আমি প্রশ্ন করি, আপনাদের দেশে প্রতিদিন কত নারী ধর্ষণের শিকার হয়, তখন মানবাধিকার কোথায় থাকে? আমাদের দেশের পুলিশের ওপর যখন হামলা, হত্যার চেষ্টা করা হয়, তখন তারা কি চুপ করে বসে থাকবে? জাতিসংঘের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা বড় বড় কথা বলেন। অথচ ফিলিস্তিনে যখন সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করা হয়, সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়, তখন তারা কোথায় থাকে? জাতিসংঘ ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারে না। অথচ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমাদের মতো দেশকে বিপদে ফেলে। মানিকগঞ্জ বিজয়মেলা মাঠে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দিন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম। বক্তব্য দেন দলের সম্পাদকম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি, ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি, নাঈমুর রহমান দুর্জয় এমপি, মমতাজ বেগম এমপি, কেন্দ্রীয় নেতা সাঈদ খোকন, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, সামছুন নাহার চাপা প্রমুখ। বেলা ১১টা থেকেই সম্মেলনস্থলে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে মাঠ ছাড়িয়ে মানুষের ঢল নেমে আসে শহিদ রফিক, বেউথা, বাসস্ট্যান্ড সড়কে। নৌকার আদলে করা মঞ্চে বিকাল আড়াইটার দিকে সভামঞ্চে উপস্থিত হন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে সম্মেলনে উপস্থিত হন ওবায়দুল কাদের। বক্তব্য শেষে তিনি মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে গোলাম মহীউদ্দিনকে সভাপতি ও আব্দুস সালামকে সাধারণ সম্পাদক এবং আব্দুল মজিদ ফটোকে সিনিয়র সভাপতি ঘোষণা করেন।