নির্বাচনি সংস্কারের ৯ সুপারিশে ইসির কাছে প্রস্তাব চেয়েছে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার: দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে দলীয় পদ বা নির্বাচনে মনোনয়ন না দেয়াসহ নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাছাই করে আশু বাস্তবায়নযোগ্য নয়টিকে চিহ্নিত করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে সেই সুপারিশগুলোর ওপর প্রস্তাব চেয়েছে সরকার।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার অনুশাসন মোতাবেক ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে ৬টি কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এরমধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের দাখিলকৃত প্রতিবেদন থেকে আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবসমূহ চিহ্নিত করে আইন উপদেষ্টা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গত ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সংস্কার কমিশনসমূহের বাছাইকৃত আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়/বিভাগ নির্ধারিত ছকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব পাঠাবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এক্ষেত্রে সংস্কার কমিশনসমূহের বাছাইকৃত আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহ নির্ধারিত ছকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব প্রেরণ করতে হবে। ইসি সচিবকে পাঠানো চিঠিতে নয়টি বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সুপারিশগুলোর কিছু বিষয়ে কেবল ইসিকে, আর কিছু বিষয়ে ইসি এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগকে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (সংশোধন); নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন, ২০০১ (সংশোধন); নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ সংশোধন; নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণমাধ্যম নীতিমালা (স্থানীয় ও আর্ন্তজাতিক) পর্যবেক্ষণ ও সাংবাদিক নীতিমালা (সংশোধন); রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ সংশোধন; নির্বাচনী আইনে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও শুদ্ধাচার চর্চা নিশ্চিত করা বিষয়ক নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ওপর ইসি এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগকে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে। আর হলফনামার খসড়া, ভোটার তালিকা হালনাগাদ (প্রবাসী) কাজ শুরু করা ও পোস্টাল ব্যালট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার বিষয়ে সুপারিশে বলা হয়েছে ইসিকে প্রস্তাব পাঠানোর জন্য। এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, চিঠি পেয়েছি। এখন আমরা এটার জবাব দেবো। প্রশাসনিক বিষয় হলে আমি বলতে পারতাম, এটা তো নীতিগত ব্যাপার। এ সিদ্ধান্ত কমিশন নেবেন। আমি যেটুকু জানি আমাদের দিক থেকে একটা উত্তর দেয়া হবে।
জানা গেছে, অন্য চারটি সংস্কার কমিশনগুলোর দেয়া সুপারিশগুলোর মধ্যে ১১২টি সুপারিশ বাছাই করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিচার বিভাগের ৩৮ দফা, দুদক সংস্কার কমিশনের ৪৩টি, পুলিশ সংস্কার কমিশনের ১৩টি ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮টি সুপারিশ রয়েছে।রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে থেকে নির্বাচন যোগ্য সংস্কার করে দ্রুত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেয়ার দাবি উঠেছে। এক্ষেত্রে ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে আশু বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার কার্যক্রম সেই উদ্যোগেরই ইঙ্গিত বহন করে।