নতুন অধ্যায়ের সূচনা : ৬০ টন পণ্য নিয়ে সিলেট থেকে স্পেন গেলো প্রথম কার্গো ফ্লাইট

স্টাফ রিপোর্টার: প্রথমবারের মতো সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ৮টা ৫ মিনিটে পণ্য নিয়ে স্পেনের উদ্দেশে উড়াল দেয় মেক্সিকান কার্গো এয়ারলাইন মাস এয়ার এবং গ্যালিস্টেয়ারের যৌথ মালিকানার একটি এয়ারবাস। সপ্তাহে এভাবে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা হবে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। ঢাকার পর সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইট শুরু হওয়ায় খুশি রপ্তানিকারক ও সিলেটের ব্যবসায়ীরা। প্রথম ফ্লাইটে রপ্তানি হওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির গার্মেন্টস সামগ্রী। রোববার সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টির কথা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা সকলে মিলে একত্রে কাজ করছি বলে এটা সম্ভব হয়েছে। সিলেটের জন্য আজ ঐতিহাসিক দিন। ঢাকার বাইরে সিলেট থেকে স্বাধীনতার পর এটি প্রথম কার্গো ফ্লাইট। আমরা আমাদের সক্ষমতা কাজে লাগিয়েছি। ভবিষ্যতে যাতে এ ফ্লাইট অব্যাহত থাকে সেজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।’ ওসমানী বিমানবন্দরে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী ও মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান। স্বাগত বক্তব্য দেন ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমেদ প্রমুখ। এর আগে উপদেষ্টা কার্গো কমপ্লেক্স ঘুরে দেখেন। বিকেল পৌনে ৫টায় ওসমানী বিমানবন্দরে পৌঁছায় কার্গো ৩৩০ ফ্লাইট। এটি অবতরণের পর শুরু হয় পণ্য লোড কার্যক্রম। মোট ৬০ টন পণ্য লোড করা হয়। লোড হ্যান্ডেলিংয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করে বাংলাদেশ এয়ারলাইস কর্তৃপক্ষ। আর নিরাপত্তা দেয় বেবিচক কর্মীরা। প্রথম ফ্লাইটে ঢাকার এমজিএইচ গ্রুপ ও অরিজিন সলিউশন্সসহ আরেকটি কোম্পানির গার্মেন্ট পণ্য যায়। এর আগে শনিবার ট্রাকযোগে ওসমানী বিমানবন্দরে পণ্য পৌঁছায়। রাত ৮টা ৫ মিনিটে ফ্লাইটটি ওসমানী বিমানবন্দ ছাড়ে। এ সময় বিভিন্ন এয়ারলইন্স কর্মকর্তা, ঢাকার রপ্তানিকারকসহ সিলেটের সুধিজন উপস্থিত ছিলেন। আগে সিলেট থেকে যাত্রীবাহী বিমানে কিছু পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো। রোববার থেকে শুরু হলো কার্গো ফ্লাইট। কার্গো ফ্লাইটের মালামাল রাখার জন্য ২০২২ সালে ১০০ টন ক্ষমতার এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্স নির্মাণ হয় এই বিমানবন্দরে। ওই বছর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও লাভ করে। কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার সুবিধার্থে এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্সে অত্যাধুনিক এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস), ডুয়েল ভিউ স্ক্যানিং মেশিন ও এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেকশন মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। সিলেটের আমদানি-রপ্তানিকারক মো. আবুল কালাম বলেন, ‘কার্গো ফ্লাইট চালু হওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। ব্যবসায়ীরা কার্গো ফ্লাইটের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করতে পারবেন। আমদানি করারও ভালো সুযোগ রয়েছে। কার্গো ফ্লাইট চালু যাতে বন্ধ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে আমাদের সকলের।’