স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের আরও ৭টি জেলা ও ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন। গতকাল বুধবার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ ধাপে বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন। এ সময় গৃহহীনদের হাতে বিনামূল্যে আরও ৩৯ হাজার ৩৬৫টি আধাপাকা বাড়ি হস্তান্তর করেন তিনি। চুয়াডাঙ্গা জেলাতে আপাতত আর কোনো ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার না থাকায় জেলার চার উপজেলা সদর, আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগর তথা চুয়াডাঙ্গা জেলাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে ‘ভূমিহীন-গৃহহীন’ মুক্ত ঘোষণা করেন। যা খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম এবং একমাত্র ‘ভূমিহীন-গৃহহীন’ মুক্ত জেলা। একই সাথে মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর উপজেলাকেও গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে কোনো মানুষ ঠিকানাবিহীন থাকবে না বলে ফের দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তিনিই ভূমিহীন ও গৃহহীনদের আশ্রয় দিতে গুচ্ছগ্রাম করেন। দেশে কোনো ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না, আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। আমি খুবই আনন্দিত চতুর্থ পর্যায়ে ৩৯ হাজার ৩৬৫ পরিবারকে ভূমি ও গৃহ দিতে পারছি। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারা অনেক আনন্দের।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল। এ দল মানুষের পাশে থাকে। তাদের জন্য কাজ করে। আমাদের একটাই লক্ষ্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর দেশে কোনো মানুষ ঠিকানাবিহীন থাকবে না। আমরা চাই দেশের সবার ঘর-বাড়ি থাকবে। অনুষ্ঠানে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমি আরও সাতটি জেলা ও ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করছি।’ প্রধানমন্ত্রী মাদারীপুর, চুয়াডাঙ্গা, গাজীপুর, নরসিংদী, জয়পুরহাট, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এই সাত জেলার সব উপজেলাসহ ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেন। এর আগে তিনি পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সব উপজেলাসহ ৫২টি উপজেলাকে গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেছিলেন। এ নিয়ে মোট নয়টি জেলা ও ২১১টি উপজেলাকে গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করা হলো। শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভূমিহীনদের ঘর দেয়ার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো দুঃস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটানো।’ তিনি বলেন, জাতির পিতা দেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত করে বাংলাদেশের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে একটি উন্নত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিতে চেয়েছিলেন। যার জন্য তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। কোনো জেলায় কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন রয়েছে কিনা তা জানতে তালিকা তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই প্রতিটি মানুষ বাড়ি, আশ্রয় এবং জীবিকার সুযোগ পাবে। তারা আর সমাজের বোঝা হয়ে থাকবে না। আমরা চাই প্রত্যেকে নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং যথাযথ সম্মানের সঙ্গে বসবাস করবে।’ তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের জন্য পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেন। বঙ্গবন্ধুর পদচিহ্ন অনুসরণ করে তিনি বলেন, তার সরকার ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বাড়িঘর ও জমির মালিকানা দেয়ার উদ্যোগ নেয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রথম ধাপে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৩৩০টি এবং তৃতীয় ধাপে ৫৯ হাজার ১৩৩টি বাড়ি হস্তান্তর করেন। গতকালকে আরও ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর বিতরণের সাথে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে মোট গৃহ বিতরণের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৮২৭টি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৭১ হাজার ৩০১টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পুনর্বাসিত মানুষের সংখ্যা ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৫ (আনুমানিক একটি পরিবারে পাঁচজন হিসেবে)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া। অনুষ্ঠানে বাড়ি প্রাপ্তদের পরিবর্তিত জীবনযাত্রার উপর একটি ভিডিও-প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় চার দফায় মোট ৬৯৫টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ৪র্থ পর্যায়ে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মাঝে জমি ও গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় চুয়াডাঙ্গা প্রান্তে জেলার চার উপজেলার ৬৯টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। এবার ৪র্থ পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গা সদরে ২৬টি, আলমডাঙ্গা ১৭টি, দামুড়হুদায় ১৫টি, জীবননগরে ১১টি ঘর প্রদান করা হয়। ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ পর্যায়ে মিলে চুয়াডাঙ্গা সদরে মোট ঘর দেয়া হয়েছে ২০১টি, আলমডাঙ্গায় ১৯২টি, দামুড়হুদায় ১৩৮টি, জীবননগরে ১৬৪টি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১ম পর্যায়ে ঘর তৈরি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিলো এক লাখ ৭১ হাজার, ২য় পর্যায়ে এক লাখ ৯০ হাজার, ৩য় পর্যায়ে ২ লাখ ৫৯ হাজার, আর ৪র্থ পর্যায়ে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শহিদুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) আবু তারেক, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম ও সদর উপজেলা সহকারী ইঞ্জিনিয়ার আক্তার হোসেন। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মাজহারুল ইসলাম এর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনেরগণ এবং জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিগণ।
সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ পাওয়া মতিয়ার রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি ও আমার পরিবার ভূমিহীন। ৫০ বছর ধরে বিভিন্ন এলাকায় জায়গায় খুপড়ি ঘর বেঁধে বসবাস করে আসছি। জীবনেও ভাবিনি জমিসহ থাকার ঘর পাবো। প্রধানমন্ত্রীর এই উপহারে আমি খুবই খুশি।
কুতুবপুর ইউনিয়নের রাশিদা খাতুন বলেন, নিজের জমি না থাকায় পরের জমিতে ছাপড়া ঘর করে থাকি। স্বপ্নেও ভাবিনি জমিসহ পাকা বাড়ি হবে। সেখানে ছেলে-মেয়ে নিয়ে থাকবো। প্রধানমন্ত্রী আমাদের মতো হতদরিদ্রদের কথা ভেবেছেন। আমাদের নতুন ঘর, জমি দিয়েছেন। এটা এখনও স্বপ্ন মনে হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শামীম ভূইয়া বলেন, অসহায় ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষ যাদের নিজের জমি নেই ঘর নেই তাদেরকে নিজের ঘর ও জমি দিয়ে তাদেরকে স্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় ফিরে আসছেন তারা।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, চতুর্থ ধাপে চুয়াডাঙ্গায় ৬৯টি ঘর ভূমিহীনদের বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও যারা অসহায় ভূমিহীন গৃহহীন ছিল তারা এখন বিনামূল্যে জমিসহ ঘর পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সারা দেশে ভূমি ও গৃহহীনদের জমিসহ ঘর দিচ্ছে সরকার।
খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শহিদুল ইসলাম বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা ঐতিহ্যবাহী একটি জেলা। এ জেলাকে প্রথম নিরক্ষরমুক্ত জেলা ঘোষণা করা হয়। আবার খুলনা বিভাগের মধ্যে এই জেলাকে প্রথম ভূমি ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এ জেলাকে ভূমি ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা মানেই যে এ জেলায় আর ঘর ও জমি প্রদান করা হবে না আর তা না। পরবর্তীতে যদি কেউ ভূমি ও গৃহহীন হয় বা দেখা যায় তাদেরকে ঘর প্রদান করা অব্যহত থাকবে।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, ঈদের আগে চতুর্থ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় আলমডাঙ্গায় জমিসহ ঘর পেয়েছে ১৭টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার। গতকাল বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এসব ঘর হস্তান্তর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জমিসহ গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. কবীর হোসেন। সভায় আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৪র্থ পর্যায়ে উপজেলার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নে ১২টি, নাগদাহ ইউনিয়নে ৩টি ও বেলগাছি ইউনিয়নে ২টি ঘর উপকারভোগীদের মধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. সালমুন আহমেদ ডন, সহকারী কমিশনার ভূমি রেজওয়ানা নাহিদ, আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মোহাম্মদ আব্দুল আলীম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মুছা, ৭০’র অগ্নিসেনা বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈন উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলী মাস্টার, প্যানেল মেয়র খন্দকার মজিবুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুদ্দৌলা, উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সোহেল রানা। কলেজিয়েট স্কুলের উপাধ্যক্ষ শামীম রেজার উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামসুজ্জোহা, সমাজসেবা কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন, উপজেলা খাদ্য পরির্দশক(ওসিএলএসডি) লিটন কুমার, সমবায় কর্মকর্তা মমতা বানু, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা আজিজুল হাকীম, উপসহকারী মেডিকেল অফিসার মঞ্জুরুল হক বেলু প্রমুখ।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা হলো চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ ধাপে আরও ১১ ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে উপহারের ঘর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব ঘর হস্তান্তর করেন। এরই মাধ্যমে জীবননগরসহ ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহ ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেন। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ ধাপে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল উপহারের ঘর হস্তান্তর উপলক্ষ্যে জীবননগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকুনুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক আরাফাত রহমান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঈসা, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি, রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ শাহ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তানভীন হাসান, প্রেসক্লাবের সভাপতি মুন্সী মাহাবুবুর রহমান বাবু, জীবননগর সাংবাদিক সমিতির সভাপতি জিএ জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বাবু প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকুনুজ্জামান জানান, জীবননগর উপজেলায় এ পর্যন্ত ৪ ধাপে ১৬৬টি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুর সদর উপজেলা ৬১টি পরিবারকে ঘর প্রদান করা হয়েছে। একই সাথে মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘর প্রদানের উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনাতনে মেহেরপুর সদর উপজেলার ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে ঘরের কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়। জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান উপস্থিত থেকে মেহেরপুর সদর উপজেলা পর্যায়ের ঘর প্রদান করেন। এ সময় সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ, ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাশেম, পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৪৭ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পেলো জমিসহ ঘর। গতকাল বুধবার সকালে গাংনী উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ৪৭ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়। বুধবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এসব ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গৃহহীন পরিবারের হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন গাংনী পৌরসভার মেয়র আহম্মেদ আলী, গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাদির হোসেন শামিম। এমপির প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান আতু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিরঞ্জন চক্রবর্তী, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ সহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাগণ ও উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা ৯টি পরিবারকে ঘর প্রদান করা হয়েছে। একই সাথে মুজিবনগর উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘর প্রদানের উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষ্যে মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ মিলনাতনে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে ঘরের কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লিংকন বিশ্বাস উপস্থিত থেকে মুজিবনগর উপজেলা পর্যায়ের ঘর প্রদান করেন। এ সময় মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।