স্টাফ রিপোর্টার: দেশে করোনা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। কমতে শুরু করেছে মৃত্যু, সংক্রমণ ও শনাক্তের হার। দেড় মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম মৃত্যু হয়েছে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে। এ সময় মারা যান ১৫৯ জন। এর আগে ৪ জুলাই এর চেয়ে কম ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আগের দিন মারা যান ১৭২ জন। সব মিলিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৮৭৮। এক সপ্তাহ ধরে দৈনিক মৃত্যু ২০০-এর নিচে। এই সময়ে মৃত্যু কমেছে ২৬ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ। সাতদিনে মারা গেছেন ১২৬৫। আগের সপ্তাহে মারা যান ১৭১১ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
মৃত্যুর সঙ্গে ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৫৬৬ জন। আগের দিন এ সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ২৪৮। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৪৭ হাজার ২১০। এক সপ্তাহ ধরেই সংক্রমণ কমছে। গেল সপ্তাহে মোট শনাক্ত হয়েছে ৫০ হাজার ৩৪২ জন। এর আগের সপ্তাহে এ সংখ্যা ছিল ৭৪ হাজার ২১৪ জন। অর্থাৎ আগের সপ্তাহের চেয়ে গেল সপ্তাহে শনাক্ত কমেছে ৩২ দশমিক ১৬ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ১০ হাজার ১৫৩ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ১৮১ জন। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, এক সপ্তাহে মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৬৯৪ ও নারী ৫৭১ জন। আগের সপ্তাহে পুরুষ ৯৪১ ও নারী ৭৭০ জন মারা যায়। আগের সপ্তাহের চেয়ে গেল সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা কিছুটা কম হয়েছে। গত সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা হয় ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫০৫টি। আগের সপ্তাহে ছিল ৩ লাখ ৫ হাজার ৮৭১টি। গত এক সপ্তাহে সুস্থতার সংখ্যা কমেছে। গেল সপ্তাহে সুস্থ হয়েছেন ৭৫ হাজার ১১৬ জন। আগের সপ্তাহে এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৫ হাজার ১২২। এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ মৃত্যু এবং শনাক্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। তবে আগের সপ্তাহের চেয়ে দুই বিভাগেই মৃত্যু কমেছে। গেল সপ্তাহে ঢাকা বিভাগে মোট মৃত্যু হয়েছে ৪৭৫ জন। আগের সপ্তাহে ছিল ৬২০ জন। চট্টগ্রাম বিভাগে গেল সাতদিনে মারা যান ৩১১ জন। আগের সাতদিনে ছিল ৪৩৫ জন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যু হয়, যা মহামারির মধ্যে একদিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭২৩টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৩৩টি, জিন এক্সপার্ট ৫৩টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন ৫৩৭টি। এসব ল্যাবে ৩৭ হাজার ৪২৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৭ হাজার ২২৬টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮৫ লাখ ৫৯ হাজার ৫৪টি। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৪০ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭২ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ৭৬ ও নারী ৮৩ জন। এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ১২৯, বেসরকারি হাসপাতালে ২৬ ও বাড়িতে চারজন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ৫০ জন। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৮, রাজশাহী বিভাগে ১৩ জন, খুলনা বিভাগে ১২, বরিশাল বিভাগে ১০ জন, সিলেট বিভাগে ২৩ জন, রংপুর বিভাগে আটজন ও ময়মনসিংহ বিভাগে পাঁচজন আছেন। তাদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৩৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৩৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৩৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২০ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তিনজন এবং ২০ বছরের নিচে রয়েছেন তিনজন।