স্টাফ রিপোর্টার: টানা তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে চুয়াডাঙ্গাবাসী। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে। গতকাল সোমবার বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ২৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববারও জেলায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগে শনিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গতকাল রাজশাহী ও ঈর্শ্বদীতেও জেলায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো সিলেটে ২০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। এছাড়া যশোরে ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে চুয়াডাঙ্গায় ঈদের বেচাকেনায় ঘাটতি পড়েছে। পোশাক, জুতো ও প্রশাধনী ব্যবসায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাপপ্রবাহ। তীব্র দাবদাহে সাধারণ মানুষেরা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে আসছেন না। ফলে দিনের বেলা ঈদের বাজারে ক্রেতাশূন্য থাকছে বাজাগুলো।
আবহাওয়া অফিসসূত্রে জানা গেছে, তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ৩৮ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। নেই বৃষ্টি, নেই শীতল হাওয়া। একেবারেই নিচে নামছে না তাপমাত্রার পারদ। এমন পরিস্থিতিতে অসহনীয় গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গার জনজীবন। গত কয়েকদিন থেকে এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গত শুক্রবার, শনিবার, রোববার ও সোমবার টানা চার দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। গত রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সোমবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমের জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।
এদিকে, প্রচ- গরমে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না মানুষ। অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের চলাচলও কম দেখা গেছে। তীব্র গরম প্রভাব ফেলেছে ঈদ বাজারেও। গত কয়েক দিন থেকে দিনের বেলায় তুলনতামূলক কম ক্রেতা দেখা গেছে জেলার মার্কেটগুলোতে। খুব একটা ভীড়ও ছিল না হাট-বাজারে। জরুরি প্রয়োজনে ছাতা নিয়ে ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন কেউ কেউ। তবে খুব দ্রুত কাজ শেষ করে আবারও বাড়ি ফিরছেন তারা। গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছেন শ্রমজীবীরা ।
চুয়াডাঙ্গা শহীদ হাসান চত্বরে তীব্র গরমে ছায়ায় বসে ছিলেন দিনমজুর আশেক আলী। তিনি বলেন, রুজাই আছি। এই গরমে রুজাই থেকি কাজ করা যাচ্চি না। তাই ছায়ায় এসি বসি আছি। খুব গরম। এতো গরম তো দেকা যায় না।
কোর্ট মোড়ে তরমুজ বিক্রেতা লিন্টন আলী জানান, যত বেলা বাড়চি তত গরম বেশি লাগচি। এই গরমে মানুষ বাজারে আসচি না। আমাদের বিক্রিও তেমন হয়চি না।
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল হক জানান, গত কয়েকদিন থেকে চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। গত তিনদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। গতকাল সোমবার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এটি চলতি মরসুমের জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। তবে, আরও কয়েকদিন তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী সপ্তাহে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পাবে।