চুয়াডাঙ্গা গড়াইটুপির চালের ডিলারের ডিলারশীপ বাতিল : জামানত বাজেয়াপ্ত  

নজরুল ইসলাম: চুয়াডাঙ্গার গড়াইটুপি ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজি দরের সরকারি চাল ওজনে কম দেয়ার অভিযোগে ডিলার হায়দার মল্লিকের ডিলারশীপ বাতিল ও জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। চাল কমের বিভিন্ন অযুহাত তুলে ধরা হলেও তদন্ত কমিটির নিকট তা ধপে টেকেনি। এদিকে দীর্ঘদিন থেকে এভাবে চাল কম দেয়ার অভিযোগ করা হলেও ডিলার কোনই কর্ণপাত করেনি বলে কার্ডধারীরা অভিযোগ করে জানান।

অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রির ডিলারশীপ পান তিতুদহ ইউনিয়ন আ.লীগের ১নং সদস্য গিরিশনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হায়দার মল্লিক। তিনি গত ৮ এপ্রিল সরোজগঞ্জণ সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে কার্ড ধারীদের বিপরীতে ৬০৩ (ত্রিশ কেজি) বস্তা চাল উত্তলন করেন । ১২ এপ্রিল ট্যাগ অফিসারের অনুপস্থিতিতে গড়াইটুপি বাজারে অবস্থিত গোডাউন থেকে কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিক্রি শুরু করেন। ইউনিয়নের খাসপাড়া গ্রামের ২৬ জন কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিক্রি করার একপর্যায় তারা তাদের চাল বাজারের হাজি হারুনের দোকানে ডিজিটাল পাল্লায় মাপযোগ করেন। মাপযোগ করে দেখতে পান বস্তাপতি  দেড় থেকে ২ কেজি করে চাল কম আছে। বিষয়টি উপস্থিত থাকা ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বিষয়টি তাৎক্ষণিক ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেনকে অবগত করেন। চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে পৌছান এবং বস্তাগুলো পুনরায় মাপযোগ করে তার সত্যতা পান। এসময় চেয়ারম্যান ডিলারের গোডাউনে থাকা কয়েকটি বস্তাও মাপযোগ করেন। সেখানেও একই ভাবে প্রতিবস্তায় চাল কম পায়। চেয়ারম্যান বিষয়টি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করেন। খবর পেয়ে কিছু খনের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌছান চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা এসিল্যাণ্ড ইসরাত জাহান। এসময় উৎসুক জনতা চাল চোরের বিচার চেয়ে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এসিল্যাণ্ডের নিকট ডিলার হায়দার মল্লিক জানান সরোজগঞ্জণ সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে যে ভাবে চালের বস্তা দিয়েছে তিনি সে ভাবেই এনে বিক্রি করছেন। পরোক্ষনই ডিলার, চেয়ারম্যান, মেম্বর, এসিল্যাণ্ড সকলেই সরোজগঞ্জণ সরকারি খাদ্যগুদামে যান এবং সেখানকার বস্তার চাল ওজন করেন এবং মপযোগ সঠিক পায় বলে খাদ্যগুদামের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মোল্লা আহম্মেদ জামান জানান। এঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানিসম্পদ অফিসার ডা.এ এইচ এম শামিমুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠণ করেন। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আব্দুল হান্না ও যুবউন্নয়ন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম। বুধবার তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তাদের তদন্ত কার্যক্রম শেষ করেন। পরের দিন তদন্ত কর্মকর্তারা তারা তাদের  প্রতিবেদ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট জমাদেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর রোববার সকালে উপজেলা পরিষদের জরুরী সভার অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তদন্ত পর্যালোচনা করে সরকারি চাল ওজনে কম দেবার অভিযোগে ডিলার হায়দার মল্লিকের ডিলারশীপ বাতিল ও জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। এব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান ডিলারের ডিলারশীপ বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে নিশ্চিত করেছেন। সেই সাথে তিনি আরও বলেন, সরকারি কোন অনুদান বা ত্রাণ নিয়ে কেউ নয়ছয় করলে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। সে যেই হোক না কেন।

 

Comments (0)
Add Comment