স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীতে ওমিক্রন ধরনের তিনটি সাব-টাইপ (উপধরন) পাওয়া গেছে। এ উপধরনগুলো বেশি ছড়াচ্ছে। ইতোমধ্যেই করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের জায়গা দখল করেছে ওমিক্রন। জানুয়ারিতে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা নমুনার ৯০ দশমিক ২৪ শতাংশেই মিলেছে ওমিক্রনের উপস্থিতি।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ-এর (আইসিডিডিআরবি) গবেষণা এবং গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটা (জিআইএসএইডে) ওয়েবসাইটে জমা হওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আইসিডিডিআরবির গবেষণায় বলা হয়, ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, ঢাকা শহরে তিনটি সাব-টাইপ রয়েছে। এগুলো আফ্রিকান, ইউরো-আমেরিকান এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ওমিক্রন ধরনের সঙ্গে মিলে যায়। আইসিডিডিআরবি বলছে, জানুয়ারির প্রথম দুই সপ্তাহে তাদের ল্যাবরেটরিতে ১ হাজার ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২৮ শতাংশই ছিল করোনায় আক্রান্ত। আর আক্রান্তদের মধ্যে ওমিক্রন ছিল ৬৯ শতাংশের দেহে। গবেষণা সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশে ৬ ডিসেম্বর ওমিক্রন প্রথম শনাক্ত করা হয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে ১১ ডিসেম্বর। ওই মাসেই আইসিডিডিআরবির ল্যাবে পরীক্ষা করা ঢাকা শহরের ৭৭ জন করোনা রোগীর মধ্যে পাঁচটিতে ওমিক্রন শনাক্ত করা হয়েছিল। অন্যগুলো ছিল ডেল্টা ভেরিয়েন্ট। ওমিক্রনে আক্রান্ত ২৯ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে আইসিডিডিআরবি প্রতিবেদনে। এর মধ্যে পুরুষ ১৩ জন ও মহিলা ১৬ জন। ২৭ জনের কোনো উপসর্গও ছিল না। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২৯ জনের মধ্যে মাত্র একজনকে এক দিনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। করোনার এ ধরনে আক্রান্ত একজন সৌদি আরব থেকে ফেরা। বাকিরা দেশেই ছিলেন। দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ফের উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। শুরু হয়েছে তৃতীয় ঢেউ। করোনা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের বরাতে গত রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরের ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, দেশে করোনা সংক্রমণের হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা ৮০ শতাংশই করোনা পজিটিভ। ধারণা করা হচ্ছে, এখন বেশির ভাগই করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সামাজিক সংক্রমণ ঘটেছে। আস্তে আস্তে ডেল্টার জায়গাগুলোকে দখল করে ফেলছে ওমিক্রন। বিষয়গুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে। এখন সিজনাল যে ফ্লু হচ্ছে তার সঙ্গে কিন্তু ওমিক্রনের মিল রয়েছে। তাই এখন থেকে আরও সতর্ক হতে হবে।’
গত নভেম্বরে সংগ্রহ করা নমুনাতেই করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছিল। তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছিল, তাতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতিই ছিল বেশি। জানুয়ারিতে এসে সে চিত্র বদলে গেছে। জানুয়ারিতে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা ৯০ দশমিক ২৪ শতাংশে নমুনাতেই মিলেছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি। বাকি ৯ দশমিক ৭৬ নমুনায় পাওয়া গেছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট।