২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্ত এক হাজার ২৭৩ জন : ১৪ জনের মৃত্যু : ৪২ ল্যাবে ৮ হাজার ১১৪ নমুনা পরীক্ষা
স্টাফ রিপোর্টার: করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১ হাজার ২৭৩ জন শনাক্ত হয়েছেন। ৭১ দিনের মধ্যে ২৪ ঘণ্টার হিসেবে এটা সর্বোচ্চ শনাক্ত। এ নিয়ে করোনায় মোট শনাক্ত রোগী হলো ২২ হাজার ২৬৮ জন। অপরদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট ৩২৮ জন মারা গেলেন। আর একই সময়ে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ২৫৬ জন। মোট সুস্থ হওয়ার মানুষের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৭৩ জন। নমুনা পরীক্ষা আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে। পরীক্ষায় গতি আসায় শনাক্তও বাড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল রোববার বেলা আড়াইটায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা ভাইরাসবিষয়ক নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, করোনা ভাইরাস শনাক্তে ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা) আরও ৮ হাজার ৫৭৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয় ৮ হাজার ১১৪টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ৭৫ হাজার ৪০৮টি। রোববার মোট ৪২টি ল্যাবের সবকটিতেই নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। শনিবার ৬ হাজার ৭৮২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এদিন শনাক্ত ছিলো ৯৩০। ছুটির কারণে ৮টি ল্যাবে এদিন পরীক্ষা হয়নি।
এর আগে ১৫ মে ২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক ১ হাজার ২০২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, গত ১১ মে ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের সংখ্যা প্রথমবারের মতো এক হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর ১২ মে শনাক্ত হন ৯৬৯ জন, ১৩ মে এক হাজার ১৬২ জন, ১৪ মে এক হাজার ৪১ জন এবং ১৬ মে ৯৩০ জন শনাক্তের ঘোষণা আসে।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ ও একজন নারী। ১৩ জন হাসপাতালে এবং একজন বাসায় মারা গেছেন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের নয়জন এবং চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচজন আছেন। ঢাকা বিভাগের মধ্যে রাজধানীর হাসপাতালে পাঁচজন, কেরানীগঞ্জ, সাভার, নারায়ণগঞ্জ ও শরীয়তপুরে একজন করে মারা গেছেন। আর চট্টগ্রামে চারজন এবং কুমিল্লায় একজন মারা গেছেন। শনাক্তের হিসেবে মৃত্যুহার ১.৪৭ শতাংশ।
মারা যাওয়াদের বয়স বিশ্লেষণ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর বলেছে, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে দুজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন আছেন।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭৬ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন তিন হাজার ২৪৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় ৭৪ জন আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৬০৪ জন। তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৬৩৪ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। এ নিয়ে দুই লাখ ৪০ হাজার ৫৪৮ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন দুই হাজার ৩৫৮ জন। ফলে মোট ছাড়া পেয়েছেন এক লাখ ৯১ হাজার ৫৩১ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৯ হাজার ৪১৭ জন। ডা. নাসিমা করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানান বুলেটিনে।